পিলখানা হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়

পিলখানা হত্যা মামলার রায়ে হাইকোর্টের ১১ দফা সুপারিশ

পিলখানায় ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা ইউনিটের ব্যর্থতা তদন্ত করে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করাসহ রায়ে ১১ দফা সুপারিশ করেছেন হাইকোর্ট।

আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) পিলখানা হত্যা মামলায় ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার এই পূর্ণাঙ্গ রায় (ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর) প্রকাশ করেন বিচারপতি শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চ। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার।

ওই রায়ে বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার তার ১১ দফা সুপারিশে উল্লেখ করেছেন:

  • ডাল ভাত কর্মসূচি অব্যাহত রাখা যথার্থ হবে না।
  • আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে বিজিবি সদস্যদের সম্মান হারিয়ে যায় এমন কোনও কর্মসূচি নেওয়া ঠিক হবে না।
  • বিজিবির মধ্যে কোনও সমস্যা দেখা দিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজিবি কর্তৃপক্ষকে তা সমাধানে যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নিতে হবে।
  • অফিসার ও সদস্যদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ থাকলে তা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
  • বিজিবি সদস্যদের পাওনা টিএ ডিএ বিল যত দ্রুত সম্ভব পরিশোধ করতে হবে।
  • ছুটিসহ বিদ্যমান সমস্যা সমাধান করতে হবে।
  • ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাপারে বিজিবি কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা ইউনিটের ব্যর্থতা তদন্ত করে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।
  • সিপাহি ও অফিসারদের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
  • কেউ দায়িত্ব অবহেলা করলে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
  • এ ধরনের শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যকার জটিল পরিস্থিতি এড়াতে অফিসার ও সেনাদের মধ্যে অপ্রত্যাশিত ভাষা ও আচরণ পরিহার করতে হবে।
  • পিলখানার অস্ত্রাগারে নিরাপত্তা কঠোর পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে হবে যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের জটিল পরিস্থিতি এড়ানো যায়।

উল্লেখ্য, পিলখানায় সে সময় বিডিআর হত্যাকাণ্ডে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যার দায়ে দায়ের করা ওই মামলায় ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১৭ সালের নভেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন আদালত। মামলার ৪৫ আসামি খালাস পান।