পুরুষ খালি গায়ে থাকতে পারবে না এবং শরীর দেখা যায় এরকম পোশাক পরলে নারীকে জরিমানা করার বিষয়ে একটি আইনের খসড়া তৈরি করছে কম্বোডিয়া সরকার।
জন-শৃঙ্খলা জনিত এই খসড়া আইনে নারীদের “খুব বেশি খাটো অথবা খুব বেশি খোলামেলা” পোশাক পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। আইনটিতে পুরুষের খালি গায়ে থাকা নিষিদ্ধ করারও প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
সরকার বলছে, দেশটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সামাজিক মান মর্যাদা রক্ষার উদ্দেশ্যে বিলটি আনা হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে নারীরা খোলামেলা বা শরীর দেখা যায় এমন পোশাক পরলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, ‘যথাযথ’ পোশাক না পরলে গানের শিল্পী ও অভিনেত্রীদের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এপ্রিল মাসে একজন নারীকে পর্নোগ্রাফির অভিযোগে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে সোশ্যাল মিডিয়াতে জামা কাপড় বিক্রি করার সময় তিনি শরীর দেখা যায় এরকম ‘অশোভন’ ও ‘উস্কানিমূলক’ পোশাক পরেছিলেন।
সে সময় প্রধানমন্ত্রী হুন সেন অনলাইনে নারীদের এধরনের লাইভ স্ট্রিমিংকে “আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের লঙ্ঘন” বলে উল্লেখ করেছিলেন। বলেছিলেন, এসবের কারণে নারীদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
যদিও সরকারের এই উদ্যোগ জানাজানি হওয়ার পর সেটা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। প্রস্তাবিত এই আইনটিতে মূলত নারীর পোশাকের ব্যাপারে যেসব বিধি-নিষেধের কথা বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়াতে সে ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হলেও, অনেকে বিলটির অন্যান্য বিষয় নিয়েও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন।
খসড়া আইনটিতে যারা ‘মানসিক প্রতিবন্ধী’ তাদের ‘জনসমক্ষে অবাধ’ হাঁটাচলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। নিষিদ্ধ করতে বলা হয়েছে সব ধরনের ভিক্ষাবৃত্তি। এছাড়াও কোন একটি জায়গায় জড়ো হওয়ার আগে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন ক্যাম্বোডিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের নির্বাহী পরিচালক চাক সোপিপ বলেছেন, বিলটি পাস হলে সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে।
সূত্র- খবর বিবিসি বাংলা