উচ্চ আদালত
উচ্চ আদালত

হাইকোর্টে জাল নথি: দুই কারারক্ষীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ

অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুস সাত্তার জালিয়াতি (বিদেশি পিস্তলকে চাইনিজ কুড়াল দেখিয়ে) করে জামিন নেয়ার ঘটনায় ঝিনাইদহ কারাগারের দুই কারারক্ষীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, তদন্তে আইনজীবী জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন।

আদালত যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন তারা হলেন- চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কায়েতপাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার, ঝিনাইদহ কারাগারের দুই রক্ষী কনস্টেবল বিশ্বজিৎ বাবু ও কনস্টেবল খায়রুল আলম, তদবিরকারক চাঁন্দ আলী বিশ্বাস এবং এফিডেবিটকারী আসামি সাত্তারের পিতা নিজামুদ্দিন।

আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী শেখ আতিয়ার রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।

আদেশের আগে আসামিপক্ষের আইনজীবী শেখ আতিয়ার রহমানকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, ‘জালিয়াত চক্র আপনাকে চিনল কীভাবে? জালিয়াত চক্র আপনার ওপর ভর করেছে কেন? আরও দুটি জামিন জালিয়াতির মামলায় আপনি ও আপনার ক্লার্ক সোহেল রানার নাম এসেছে। মামলা পেলেন আর দাঁড়িয়ে গেলেন? একজন সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে কি আপনার কোনো দায়িত্ব নাই?’

এর জবাবে আইনজীবী বলেন, ‘জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পেরে আসামির এলাকায় আমার ছেলে ও দুই সহকারী পাঠিয়ে তথ্য যাচাই করে তা নিয়ে আদালতে দাখিল করেছি। শেষ বয়সে এসে এমন পরিস্থিতির জন্য আমি লজ্জিত।’

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২ মে রাতে অস্ত্র ও গুলিসহ সাত্তারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন সাত্তারের নামে অস্ত্র আইনে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় একই বছরের ৩১ অক্টোবর তাকে অস্ত্র আইনের দুটি ধারায় ১৭ বছরের সাজা দেন আদালত।

নিম্ন আদালতের ওই রায় জাল করে আগ্নেয়াস্ত্রের পরিবর্তে ‘চাইনিজ কুড়াল’ উদ্ধার দেখিয়ে ভুয়া এজাহার ও রায় বানিয়ে তা হাইকোর্টে দাখিল করেন সাত্তার। হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে তাকে এক বছরের জামিন দেন। কিন্তু ওই আসামির দাখিল করা নথিপত্র নিয়ে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ আতিয়ার রহমানের সন্দেহ হওয়ায় এ আইনজীবী নিজেই অনুসন্ধান চালান। তার অনুসন্ধানে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর ওই আইনজীবী গত ২১ সেপ্টেম্বর বিষয়টি লিখিতভাবে আদালতকে জানান। এরপর আদালত সাত্তারের জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে আদেশ দেন।