জেলা জজ আদালত, ফেনী
জেলা জজ আদালত, ফেনী

পলিথিন-বর্জ্যে অস্তিত্বসংকটে ফেনীর পাগলিছড়া খাল: ব্যবস্থা নিতে আদালতের নির্দেশ

ফেনী পৌরসভার ১০, ১১, ১২ ও ১৮নং ওয়ার্ডের পানি নিস্কাশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও একমাত্র খাল হলো ‘পাগলিছড়া খাল’। ময়লা আবর্জনা ও পলিথিন ফেলে দূর্ষনের ফলে খালটি ভরাট হয়ে বর্তমানে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকার জলাবদ্ধতাসহ মারাত্মক পরিবেশ দূষণের সৃষ্টি হচ্ছে। বিভিন্ন পত্রিকার এমন সংবাদ আমলে নিয়ে ২৭ অক্টোবর বুধবার ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসাইন এর আদালত ঘটনাটি তদন্ত এবং খালের পানির চলাচল স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২৬ অক্টোবর দৈনিক অধিকার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সংবাদ আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম নান্টু মাধ্যমে এই আদালতের বিশেষ নজরে আসে। দৈনিক অধিকার পত্রিকায় শেষ পাতায় শিরোনাম হলো “অস্তিত্ব সংকটে ফেনীর পাগলিছড়া খাল” সংবাদ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত হয়। এছাড়া সাপ্তাহিক ফেনীর ডাক পত্রিকায় উক্ত একই বিষয়ে প্রথম পাতায় গত ২৫ অক্টোবর, ২০২১ইং তারিখ “ফেনীতে পলিথিন বর্জ্যের দূষন: হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ” শিরোনামে বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশিত হয়। আইনজীবীর মাধ্যমে দাখিলকৃত বেশ কিছু ছবি পর্যালোচনায় দেখা যায়, মামলায় উল্লেখিত পাগলিছড়া খালটি মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষণের শিকার। খালের বিভিন্ন স্থানে পলিথিন ও ময়লা আবর্জনা ফেলে খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বিঘ্নিত হচ্ছে এবং জলাবদ্ধতা সৃষ্টিসহ মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হচ্ছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।

আদালত বলেছে উক্ত সংবাদ বিশ্লেষণে দেখা যায়, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ধারা ৬ঙ, ৭ ও ১৫(১) ধারার টেবিল ৮ অনুযায়ী প্রয়োগযোগ্য, শাস্তিযোগ্য ও বিচারযোগ্য অপরাধ মর্মে প্রতীয়মান হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ ও পরিবেশ আদালত আইন, ২০১০ প্রণয়ন করে পরিবেশ সংক্রান্ত অপরাধের বিষয়ে বিচার নিশ্চিত করার জন্য স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট কে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করেন। জনজীবনের স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত ও পরিবেশ সংক্রান্ত অপরাধ নির্মুল করার লক্ষ্যে এই সংবাদকে আমলে নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত হওয়া প্রয়োজন মর্মে এই আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয়।

তাই প্রকাশিত সংবাদসমূহ ও আইনজীবীর আবেদন বিবেচনায় নিয়ে আদালত স্বপ্রনোদিত হয়ে অপরাধ আমলে নিয়ে ফেনীর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে তদন্তের নির্দেশ দেন এবং আগামী ১৪ ডিসেম্বর ধার্য তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বলা হয়।

আদালত আরও বলেন, উল্লেখিত খালের স্বাভাবিক জলাধার সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কোন ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় নির্বাহী প্রকৌশলী, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফেনী কে ফেনী জেলার খাল ও নদীর স্বাভাবিক ব্যবস্থাপনা ও স্বাভাবিক পানি চলাচল নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩ ও বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করা হলো।

ফেনী প্রতিনিধি/ ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম