চা দোকানে কথা কাটাকাটির জেরে গুলি করে হত্যা, আসামীর মৃত্যুদন্ড
মৃত্যুদণ্ড (প্রতীকী ছবি)

ফাঁসি দেওয়ার আগে ১০ বার চিন্তা করি: প্রধান বিচারপতি

যে কোনো আসামির ফাঁসির (মৃত্যুদণ্ড) রায় দেওয়ার আগে বিচারকরা ১০ বার চিন্তা করলেও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টকে দোষ দেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

চুয়াডাঙ্গার আব্দুল মকিম ও গোলাম রসুল ঝড়ুর বিরুদ্ধে দেওয়া ফাঁসির আদেশের ওপর আপিলের শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ৫ সদস্যের বেঞ্চের সভাপতি হিসেবে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের আব্দুল মোকিম (৬০) ও গোলাম রসুল ঝড়ু (৬২) দুর্লভপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার হোসেন ওরফে মনোয়ার মেম্বার হত্যাকাণ্ডের আসামি ছিলেন। ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

আপিল শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আদালতে বলেন, ‘সুজন নামে একজনের রেগুলার আপিল আছে। কিন্তু তারও একটা জেল পিটিশন ছিল। যেখানে তার কোনো আইনজীবীও ছিল না। কিন্তু শুনানি করে আপিল বিভাগ তাকে খালাস দিয়েছেন।’

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ওই মামলায় ৩ আসামির মধ্যে ২ জনের আপিল ছিল। আর সুজনের ছিল জেল পিটিশন। অথচ নিয়মিত আপিল যাদের, তাদের ফাঁসি হয়েছে। আর জেল পিটিশন শুনানি করে আমরা ওই (সুজন) আসামিকে খালাস দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘এই লোকের (সুজন) পক্ষে আইনজীবী একটা কথাও বলেনি। শুধুমাত্র তার উপস্থিতি আছে। কারণ আমরা বাসায় ফাইল নিয়ে ভালো করে দেখে তারপর দেই।’

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘কোর্টের ওপর এমন ব্লেইম আসে, এটা বিরাট বিব্রতকর কোর্টের জন্য। তখন অবশ্য আমি প্রধান বিচারপতি ছিলাম না। তারপরও আমাদের প্রত্যেকের জন্য বিব্রতকর। আমরা প্রত্যেকটা ফাঁসি দেওয়ার আগে ভালো করে দেখি। ফাঁসি দেওয়ার আগে আমরা কম করে হলেও ১০ বার চিন্তা করি।’

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালের ফাঁসির মামলা পড়ে ছিল। সেগুলো আমার আমলে শেষ হয়েছে। অথচ এই মামলাগুলো সবার আগে গুরুত্ব পাবে। এটি নিয়ে কোন আইনজীবী মেনশনও করেন না। এসব মামলায় তো একদিনও সময় চাওয়া উচিত না। অথচ তালিকায় আসার পর আইনজীবীরা সময় চান।’

‘২০১৩ সালের দুটি আপিল পড়ে থাকলে অথচ আদালতে মেনশন (উপস্থাপন) করা হলো না। কেন পড়ে থাকলো,’ প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি।

ওই দুজনের আপিল খারিজ করে দিয়ে আদালত বলেন, এগুলো অকার্যকর হয়ে গেছে, কারণ তাদের জেল আপিল আদালত আগেই খারিজ করে দিয়েছেন। লিখিত রায়ে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট কিছু নির্দেশনা দেবেন।