প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (ফাইল ছবি)
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (ফাইল ছবি)

বিদায় ভাষণে জয় বাংলা বলে বক্তব্য শেষ করলেন প্রধান বিচারপতি

দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বিচারক হিসেবে শেষ কর্মদিবস ছিল আজ। এ প্রেক্ষিতে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনার বিদায় ভাষণে জয় বাংলা বলে বক্তব্য শেষ করেন প্রধান বিচারপতি।

প্রসঙ্গত, জয় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা চেয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. বশির আহমেদ। ওই রিট নিষ্পত্তি করে ‘জয় বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

এর ফলে, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা এবং সাংবিধানিক পদে যারা আছেন, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তারা যখন বক্তব্য দেবেন, তখন বক্তব্যের শেষে তাদের ‘জয় বাংলা’ বলতে হবে।

আজ বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

বিদায় ভাষণে প্রধান বিচারপতি যা বললেন

বিদায় ভাষণের শুরুতে প্রধান বিচারপতি বলেন, শুরুতেই অবনত মস্তকে পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নিকট গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, যিনি আমার মতো একজন সাধারণ মানুষকে বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন করেছেন। আজকের এই দিনটিও আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এরপর তিনি মুজিববর্ষ এবং মহান স্বাধীনতার গৌরবোজ্জ্বল মাহেন্দ্রক্ষণে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। গভীরভাবে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। সেই সাথে ত্রিশ লাখ শহিদ এবং দুই লাখ মা-বোন যাদের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র এসেছে তাঁদের স্মরণ করেন। স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা ও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের গুলোতে নিহত বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের।

সৈয়দ মাহমুদ হোসেন পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি তাঁর পিতা অ্যাডভোকেট মরহুম সৈয়দ মোস্তফা আলীকে, যার কাছে উনার আইন পেশার হাতেখড়ি। এ সময় তিনি তাঁর অশীতিপর স্নেহময়ী মা বেগম কাওছার জানানকে স্মরণ করেন, যিনি তাঁকে তিলেতিলে গড়ে তুলেছেন। এ পর্যায়ে তিনি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন সহধর্মিনী বেগম সামিনা খালেকের প্রতি। যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি এবং এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর আইন পেশায় যোগদান করেন। কিন্তু বিচারপতি হিসেবে সৈয়দ মাহমুদ হোসেন শপথ গ্রহণের পর বিচারকার্যে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকল্পে স্বেচ্ছায় আইন পেশা ত্যাগ করেন।

প্রধান বিচারপতি তাঁর দুই সিনিয়র আইনজীবী মরহুম শিহাব উল্লাহ এবং প্রথিতযশা আইনজীবী মরহুম খন্দকার মাহবুব উদ্দিন আহমাদকে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, তাঁদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণাতেইসুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় আমি নিবিষ্ট হই।

তিনি হৃদয়ের গহীন থেকে স্মরণ করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রতিথযশা সিনিয়র আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মরহুম মাহমুদুল ইসলামকে। যার সান্নিধ্যে সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজ করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘তাঁর  (মাহমুদুল ইসলাম) সান্নিধ্য আমার বিচারক জীবনের জন্য পাথেয় হয়েছে। তাঁর ঋণ কখনো শোধ হবে না।

তিনি আরও স্মরণ করেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ.টি.এম আফজালকে, যার আদালতে হাইকোর্ট বিভাগে তিনি আইনজীবী হিসেবে প্রথম দাঁড়িয়েছিলেন (appear).  

এছাড়াও তিনি মহামারি কোভিড-১৯ এ যেসকল আইনজীবী ও বিচারক মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদেরকেও স্মরণ করেন।

মূল বক্তব্যের শুরুতে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ; আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের দায়িত্ব এবং স্বাতন্ত্রিক বৈশিষ্ট্য স্পষ্টভাবে বিধৃত রয়েছে। তিনটি অঙ্গের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কই গণতন্ত্রকে বিকশিত করে। নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, It is the beauty of our constitution.

তিনি বলেন, একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস হলো জনগণের আস্থা। এটা হলো বিচারকদের সততা, সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতার প্রতি গণমানুষের অবিচল বিশ্বাস। সাধারণ মানুষের এই আস্থা অর্জনের জন্য বিচারকদের একদিকে যেমন উঁচু নৈতিক মূল্যবোধ ও চরিত্রের অধিকারী হতে হবে, তেমনি অন্যদিকে সদা বিকাশমান  ও পরিবর্তনশীল আইন, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ও সামাজিক মূল্যবোধ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। এটা অর্জন সম্ভব কেবলমাত্র নিয়মিত অধ্যয়ন, সময়মত এবং আইনানুগভাবে বিচারিক কাজ সম্পন্নকরণের মাধ্যমে। এ প্রসঙ্গে ভারতের সাবেক প্রধান বিচারপতি R.M Lodha এর কথার প্রতিধ্বনি করে বলছি-

Judges should not forget that they hold public office. Their function is one of the essential functions of the state. In discharging their functions and duties, the Judges represent the state. The office that a Judge holds is an office of public trust. A Judge must be a person of impeccable integrity and unimpeachable independence. He must be honest to the core with high moral values. When a litigant enters the courtroom, he must feel secured that the Judge, before whom his matter has come would deliver justice impartially and uninfluenced by any consideration. The standard of conduct expected of a Judge is much higher than an ordinary man. This is no excuse that since the standards in the society have fallen, the Judge who are drawn from the society cannot be expected to have high standards and ethical firmness required of a Judge. The credibility of the judicial system is dependent upon the Judges who man it. For a democracy to thrive and the rule of law to survive, justice system and judicial process have to be strong and every Judge must discharge his judicial functions with integrity, impartiality and intellectual honesty.

আইনজীবীদের উদ্দেশে সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, একজন আইনজীবীর জীবন কখনো মসৃণ নয়। বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে প্রয়োজন একাগ্র নিষ্ঠা, সময়ানুবর্তিতা, ধৈর্য, সততা, পরিশ্রম এবং নিরন্তর অধ্যয়ন। প্রতিটি মামলা পরিচালনায় তাঁর শিক্ষা, মেধা এবং বিচক্ষণতার প্রয়োগ হতে হবে। জেনে শুনে মামলার ঘটনার বিকৃত উপস্থাপন করা একজন আইনজীবীর কখনোই উচিত নয়। সঠিক সাক্ষ্য প্রমাণ এবং আইনি বিশ্লেশনের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে আদালতকে সহায়তা করা মূল উদ্দেশ্য। আইন পেশার সুমহান মর্যাদা রক্ষা করতে সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে বার ও বেঞ্চকে সোচ্চার থাকতে হবে। আইনজীবী ও বিচারকরা হচ্ছে একটি পাখির দু’টি পাখার মতো। বাম হাত ও ডান হাতের মতো। তাঁদের পরস্পরের প্রতি আস্থার সম্পর্কে বিচার ব্যবস্থার গুণমত মান বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের মামলার পরিসংখ্যান থেকে এটা প্রতীয়মান হয় যে, বিচারের অভিগম্যতা অনেক বেড়েছে। একথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই যে, এখনও বাংলাদেশে আইন ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ জনগণের প্রবল আস্থা রয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করে “Judiciary is the ultimate guardian of their rights and liberties”. বিচারের সমতার নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জনে নিরন্তর কাজ করতে হবে। কারণ জনগণের আস্থাই বিচারকদের সবচেয়ে বড় পাওয়া।

প্রধান বিচারপতি বলেন, এ কথা অনস্বীকার্য যে, মামলার সংখ্যা বিবেচনায় আমাদের বিচারকের সংখ্যা অপ্রতুল। মামলার জট নিরসনে দেশের অধস্তন আদালত থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত বিচারকের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে দ্বিগুণ করা প্রয়োজন। জেনে খুশি হয়েছি যে, উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে সরকার কাজ শুরু করেছে। সংবিধানের আলোকে বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা বাস্তবতার নিরিখে অপরিহার্য। এতে বিচারপতি নিয়োগের কাজটি আরো স্বচ্ছ ও দ্রুততর হবে এবং জনগণের মধ্যে বিচারপতি নিয়োগের স্বচ্ছতা সম্পর্কে ভিত্তিহীন ধারণা দূরীভূত হবে।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত উন্নয়নে সরকার নিরন্তর কাজ করলেও অনেক জেলায় এখনো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি বিল্ডিং নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়নি। ফলে একই এজলাসে একাধিক বিচারককে কাজ করতে হয়। এতে সময় অপচয় হয়। সঙ্গত কারণে বিচারকদের কাজের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ম ত্বরান্বিত করা বাঞ্ছনীয়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ভার্চ্যুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনার জন্য ফিজিক্যাল কোর্টের মতো তেমন অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন নাই। এক্ষেত্রে ফিজিক্যাল ও ভার্চ্যুয়াল কোর্ট যুগোপতভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করলে বিচার নিষ্পত্তি আরো দ্রুততর হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ উদ্যোগ এবং সর্বোচ্চ আন্তরিকতার ফসল হচ্ছে আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ তথা আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০। যা বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে। বিচার বিভাগে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ কার্যকর প্রয়োগে মাননীয় আইনমন্ত্রী, মাননীয় আইসিটি উপদেষ্টা এবং তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর ক্রমাগত সহযোগিতা সত্যই প্রশংসনীয়। তাঁদের প্রতি রইল গভীর কৃতজ্ঞতা। বিচার বিভাগকে ডিজিটালাইজেশন করার নিমিত্তে গৃহীত মিশন ডিজিটাল জুডিশিয়ারি, ২০২১ এবং ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিচার বিভাগ যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আইনজীবী হিসেবে বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির সভাপতির সাথে বারে আমার ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আপনি ও বারের সহ সভাপতি আজ আমার সম্পর্কে যা বলেছেন তার দাবীদার আমি মোটেও নই। এ সবই কিন্তু আমার প্রতি বার সমিতির সম্মানিত সদস্যদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। আজকে আমি আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি। আপনাদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসার জন্য আমি সবাইকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। আইনজীবী এবং বিচারক হিসেবে আমি যদি কোনো কারণে আপনাদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি, তাহলে আমাকে নিজ গুণে ক্ষমা করে দিবেন।

তিনি বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যে দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে আপনাদের সম্মুখে এ আসন থেকে আমার প্রস্থান হবে, আগামী দুই সপ্তাহ অন্তে আমার বিচারক জীবনের ইতি ঘটবে এবং জীবনের শেষ অধ্যায় শুরু হবে। আমার অবসর জীবন যেন শান্তিময় হয় এজন্য আপনাদের দোয়া কামনা করছি।

প্রধান বিচারপতি বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের সহকর্মী বিচারপতিগণের অকুণ্ঠ সমর্থন ও ভালোবাসা পেয়েছি। তাই এই বিদায় বেলায় তাঁদের প্রতি জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে আইনজীবীদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। এ প্রসঙ্গে আইরিশ বিচারপতি Cramton এর বক্তব্য প্রতিধ্বনি করে বলা যায় যে,

Advocate is a representative but not a delegate. He gives to his client the benefit of his learning, his talents and his judgment; but all through he never forgets what he owes to himself and to others. He will not knowingly misstate the law, he will not willfully misstate the facts, though it be to gain the ease for his client. He will ever bear in mind that if he be an advocate of an individual and retained and remunerated often inadequately, for valuable services, yet he has a prior and perpetual retainer on behalf of truth and justice and there is no Crown or other license which in any case or for any party or purpose can discharge him from that primary and paramount retainer.

তিনি আরও বলেন, এ কথা অনস্বীকার্য যে, বিপুল সংখ্যক মামলার জট আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। মামলার জট হ্রাস ও মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হলে বিচারকদের আরো কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। বিচারপ্রার্থীদের প্রতি গভীর মমত্ববোধসহ বিচারকার্য পরিচালনার নিমিত্ত সকল স্তরের বিচারকদের অনুরোধ করছি।

এরপর সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে জয় বাংলা বলে বক্তব্য শেষ করেন বিদায়ী প্রধান বিচারপতি। 

নিয়ম অনুযায়ী বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় আগামী ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যাওয়ার কথা প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের। সে অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০ ডিসেম্বর তাঁর শেষ কর্ম দিবস। কিন্তু সে সময় কোর্টের অবকাশ থাকায় আজ প্রধান বিচারপতির শেষ কর্ম দিবসে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এর আগে সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে বিদায়ী সংবর্ধনা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট বারের আওয়ামী প্যানেল থেকে নির্বাচিত সহ সভাপতি মুহা. শফিক উল্লা।

এদিকে অবমূল্যায়নের অভিযোগ এনে প্রধান বিচারপতির সংবর্ধনা বর্জন করেছেন আইনজীবী সমিতির বিএনপিপন্থী অংশ। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিএনপিপন্থী অংশ থেকে নির্বাচিত সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

প্রসঙ্গত, রীতি অনুযায়ী শেষ কর্মদিবসে প্রধান বিচারপতিকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।

উল্লেখ্য, দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা) পদত্যাগ করার ৮৫ দিনের মাথায় ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি হিসেবে তাঁকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরের দিন বঙ্গভবনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি।

ল’ইয়ার্স ক্লাব ডেস্ক