কারাগার
কারাগার

জমি আত্মসাতের মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫ ভাই-বোন কারাগারে

বরিশালে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিলাম ডিক্রি, দলিল ও পর্চা সৃষ্টি করে ছয় একর জমি আত্মসাতের মামলায় এক জনপ্রতিনিধিসহ তার পাঁচ ভাই-বোনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আসামিরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক মহিবুল হাসান তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কারাগারে পাঠানো জনপ্রতিনিধির নাম শহিদুল ইসলাম হাওলাদার। তিনি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এবং একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপর আসামিরা হলেন- আব্দুর রশিদ হাওলাদার, আবুল হোসেন হাওলাদার, তৌহিদুল ইসলাম হাওলাদার ও কোহিনূর বেগম। তারা উপজেলার বামনীকাঠী এলাকার আব্দুল মান্নান হাওলাদারের সন্তান।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী নসির খান আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

প্রেক্ষাপট

আদালত সূত্রে জানা গেছে, একই এলাকার নরেন্দ্র নাথ পাল তার পৈত্রিক ওয়ারিশ থেকে পাওয়া ৬০২ শতাংশ জমি ভোগ দখল করে আসছেন। কিন্তু চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ওই জমি আত্মসাৎ করতে ২০১৫ সালে একটি জাল নিলাম ডিক্রি সৃষ্টি করেন।

২০১৬ সালে ওই জাল ডিক্রি উপস্থাপন করে জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে নরেন্দ্র পাল বাধা দেন। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন নিলাম ডিক্রি জাল। এছাড়া শহিদুল ইসলাম নিলাম ডিক্রি ব্যবহার করে জাল দলিল ও পর্চা সৃষ্টি করে নরেন্দ্র পালের ৩ একর ৫৩ শতাংশ জমি নিজ নামে মালিকানা করিয়ে নিয়েছেন।

বাকি জমি আত্মসাতে নরেন্দ্র পালের দুই ফুফু জয়া ও গীতা এবং হেমায়েত হোসেনের নাম ব্যবহার করে একটি সাব কবলা দলিল সৃষ্টি করেন। যা খুলনা জেলার সাতক্ষীরা সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে দলিল সম্পাদন দেখানো হয়। এছাড়া জাল পর্চা সৃষ্টি করে ২০১৬ সালে ওই জমির রেকর্ড সংশোধন করার চেষ্টা করে ভূমি অফিস থেকে ব্যর্থ হয়।

এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন নরেন্দ্র পাল।

আদালত মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন পাঠাতে অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন। এ প্রেক্ষিতে পুলিশ পরিদর্শক মো. সেলিম ঘটনার জাল-জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার বিষয়টি উপস্থাপন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

ওই দিন আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দেন। মামলার ধার্য তারিখে সমনপ্রাপ্ত হয়েও আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচারক তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

এরপর আদালতে আজ আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে বিচারক আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।