প্রায় তিন দশক আগে আনসার বিদ্রোহের ঘটনায় অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়া রিটকারী ২৩৬৩ জন আনসার সদস্যকে কিছু সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রিট নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আজ মঙ্গলবার (২ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক। আনসার ভিডিপি মহাপরিচালকের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী, কামাল উল আলম।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার অনীক আর হক গণমাধ্যমকে বলেন, আদালত কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে রিট নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। রায় প্রকাশ হলে আমরা বিস্তারিত জানতে পারব। রিটকারী আনসার সদস্যদের আপিল বিভাগ কী সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন তা পূর্ণাঙ্গ রায়ে জানা যাবে।
বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ১৯৯৪ সালের ৩০ নভেম্বর আনসার বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। যা পরে বিদ্রোহে রূপ নেয়। সেনাবাহিনী, বিডিআর ও পুলিশের সহযোগিতায় ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এ ঘটনায় পরে ২ হাজার ৬৯৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে কিছু কর্মকর্তা চাকরিতে পুনর্বহাল হলেও বাকি ২ হাজার ৪৯৬ আনসারকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
মামলার পর এসব অভিযুক্তরা বিচারে খালাস পায়। এ অবস্থায় তারা চাকরি ফিরে পেতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন। কিন্তু তাদের চাকরিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি।
এ কারণে প্রথমে ২৮৯ জন ও পরে ১ হাজার ৪৪৭ জন চাকরি পুনর্বহাল ও প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। পরে ৬৪৭ জন পৃথক দুটি রিট করেন।
২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল ২৮৯ জন ও ১০ জুলাই ১ হাজার ৪৪৭ জনকে চাকরিতে পুনর্বহালের রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ৬৭৪ জন নিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে যাদের শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা আছে তারাই চাকরি ফেরত পাবেন বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু যাদের সক্ষমতা নেই তারা যতদিন চাকরিতে ছিলেন তাদের ততদিনের পেনশন সুবিধা দিতে বলা হয়েছে।
আদালতের এ নির্দেশ রায় পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আনসার ভিডিপি মহাপরিচালক এবং রাষ্ট্রপক্ষ আপিল ও লিভ টু আপিল (আপিল অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। গত ১৬ জুন ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হলো।