বিচারকের মামলায় আইনজীবীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, মুহুরি কারাগারে
জেলা ও দায়রা জজ আদালত, নওগাঁ

বিচারকের মামলায় আইনজীবীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, কারাগারে মুহুরি

জালিয়াতির মাধ্যমে আদালতকে প্রতারিত করার অভিযোগে বিচারকের দায়ের করা মামলায় এক মুহুরিকে (আইনজীবীর সহকারী) জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ওই ঘটনায় জড়িত আইনজীবীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

নওগাঁর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইমতিয়াজুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন।

জেলহাজতে পাঠানো ওই মুহুরির নাম মহিদুল ইসলাম। তিনি নওগাঁ পৌরসভার আরজি-নওগাঁ এলাকার বাসিন্দা।

এছাড়া গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত ব্যক্তিরা হলেন- নওগাঁ আদালতের আইনজীবী বিপ্লব কুমার দাস, নওগাঁর সাপাহার উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা নাছির উদ্দিন ও তার বাবা শহিদুল ইসলাম।

আদালত সূত্রে জানা যায়, সাপাহার উপজেলার শিমুলতলী গ্রামের বাসিন্দা আবু নৈয়ম মো. মাসুম নামে এক ব্যক্তির করা চেক ডিস-অনার মামলায় ২০১৯ সালের ২ মে অভিযুক্ত নাছির উদ্দিনকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ছয় লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নওগাঁর যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩।

বিধি অনুযায়ী জামিন আবেদনের শর্ত হিসেবে জরিমানার ৫০ শতাংশ টাকা টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছেন মর্মে বিচার বিভাগীয় জমা খাতে ব্যাংক চালানের কাগজ জমা দেন আসামিপক্ষ। পরবর্তীতে আসামি নাছির উদ্দিন জামিন আবেদন করলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

জামিন নিয়ে তিনি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। কিন্তু আপিল আদালত (নওগাঁ যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২) বিচারক আদালতের সাজা বহাল রাখেন। আপিল আদালতের রায়ের পর বাদীপক্ষ চলতি বছরের ১৭ জুলাই আসামির জমা দেওয়া জরিমানার ৫০ শতাংশ টাকা উত্তোলনের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন এবং আদালত তা মঞ্জুর করেন।

কিন্তু টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে জানা যায় ব্যাংক চালান অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে কোনো টাকাই জমা হয়নি। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে সোনালী ব্যাংক নওগাঁ শাখা থেকে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে জানা যায় আদালতে জমা দেওয়া ব্যাংক চালানটি সঠিক নয় এবং ওই চালানের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো টাকা ওই শাখায় জমা হয়নি।

এ ঘটনায় নওগাঁ যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক খোরশেদ আলম নিজে বাদী হয়ে প্রতারণার অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি নাছির উদ্দিন, তার বাবা শহিদুল ইসলাম, আইনজীবী বিপ্লব কুমার দাস ও মুহুরি মহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে নওগাঁর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ২১ জুলাই মামলা করেন।

গত বৃহস্পতিবার ওই মামলায় আসামিদের আদালতে হাজিরার দিন ধার্য ছিল। দুপুরে মুহুরি মহিদুল ইসলাম আদালতে হাজিরা দিতে আসলে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন নওগাঁর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমতিয়াজুল ইসলাম।

পাশাপাশি আইনজীবী বিপ্লব কুমার দাসসহ প্রতারণা মামলার অপর তিন আসামি আদালতের নির্দেশে হাজিরা না দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।