নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের ‘ঐতিহাসিক’ পদক্ষেপ
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

অবিবাহিত নারীদেরও গর্ভপাতের অধিকার দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

ভারতের সব নারীই নিরাপদে গর্ভপাত করাতে পারবেন। গর্ভপাতের ক্ষেত্রে বিবাহিত ও অবিবাহিত নারীর ফারাক করা অসাংবিধানিক বলেও উল্লেখ করেছে দেশটির শীর্ষ আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এমনই দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।

বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, বিবাহিত নারীদের মতো অবিবাহিতরাও ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাত করতে পারবেন। বিচারপতি বলেছেন, বিয়ে না করার কারণে কোনও নারীকে এই অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা যায় না।

আদালতের রায় অনুযায়ী, ২০ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে অবিবাহিত নারীরাও গর্ভপাত করাতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে ২০২১ সালের ‘মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি আইন’ সংশোধনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে আদালত।

ভারতের ১৯৭১ সালের মেডিক্যাল টার্মিনেশন অব প্রেগনেন্সি (এমটিপি) আইন অনুসারে, বিবাহিত, তালাকপ্রাপ্ত, বিধবা, অপ্রাপ্ত বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও মানসিকভাবে অসুস্থ নারী এবং যৌন হামলা বা ধর্ষণের শিকার নারীদের গর্ভপাতের অধিকার রয়েছে।

তবে আদালতের সামনে প্রশ্ন ছিল অবিবাহিত নারীরা অন্তঃসত্ত্বা হলে, গর্ভপাত করাতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার যুগান্তকারী এই রায় দিল আদালত।

এ বিষয়ে এক নারী ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেন। আবেদনে ওই নারী বলেছেন, সম্মতির ভিত্তিতে জড়িয়ে পড়া একটি সম্পর্কের পর তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। কিন্তু সম্পর্কটি ভেঙে যাওয়ার পর তিনি গর্ভপাত করতে চান।

অন্য দিকে, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। গর্ভপাতের ক্ষেত্রে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ও ‘ধর্ষণ’ বলে মন্তব্য করেছে আদালত।

এ প্রসঙ্গে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, বিবাহিত নারীরাও যৌন হেনস্থা বা ধর্ষণের শিকার হতে পারেন। বিনা সম্মতিতে স্বামীর আচরণে একজন নারী অন্তঃসত্ত্বা হতে পারেন।

প্রসঙ্গত, ভারতে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’কে আইনি অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয় না। সেই নিরিখে শীর্ষ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ উল্লেখযোগ্য।

উল্লেখ্য, জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট দেশটিতে গর্ভপাতের বৈধতা বাতিলের রায় ঘোষণা করে। ওই রায়ের পর থেকেই বিশ্বজুড়ে গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে।