বিচারক ও আদালত সংকট নিরসনে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন: এলিনা খান

বিচারক ও আদালত সংকট নিরসনে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন: এলিনা খান

সারা দেশে মামলার জট খুলে তা দ্রুত নিষ্পত্তিতে পর্যাপ্ত আদালত সৃষ্টি ও বিচারক নিয়োগ করতে হবে। সেই সাথে দেশের প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় সালিশী মামলা নিষ্পত্তিতে দক্ষ আইনবিদ নিয়োগ করে দ্রুত সালিস নিষ্পত্তি করতে হবে।

বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস্ ফাউন্ডেশনের (বিএইচআরএফ) মানবাধিকার শাখা প্রতিনিধি ও কর্মী সম্মেলনে গত শনিবার (৮ অক্টোবর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মানবাধিকার নেত্রী অ্যাডভোকেট এলিনা খান এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে এলিনা খান বলেন, সারা দেশে মামলার জট খুলে তা দ্রুত নিষ্পত্তিতে পর্যাপ্ত কোর্ট সৃষ্টি ও বিচারক নিয়োগের করতে হবে। তিনি দেশের প্রত্যেকটি ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় সালিশী মামলা নিষ্পত্তিতে দক্ষ আইনবিদ নিয়োগ করে দ্রুত সালিস নিষ্পত্তি করতে হবে।

সেই সাথে মানুষের বিচার প্রাপ্তিতে দীর্ঘসূত্রিতাকে বিচার হীনতার সাথে তুলনা করে তিনি সমাজ থেকে সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণে একটি দক্ষ প্রশিক্ষিত মানবাধিকার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রয়োজনীতার গুরুত্ব আরোপ করেন।

সমাবেশে এলিনা খান বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলেও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন হচ্ছে না। এ সময় তিনি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি এখনও নাজুক বলে অভিযোগ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যের পূর্বে করোনাকালে মানব সেবায় সাহসী ভূমিকার জন্য ডাঃ মাহমুদা আফরোজা ও মাহমুদূর রহমান শাওন দম্পতিকে মানবাধিকার দম্পতি সম্মাননা এবং হাইড্রোলিক হর্ণ নিষিদ্ধের দাবীতে আন্দোলনরত অধিকার সৈনিক সুজন বড়ুয়াকে মানবাধিকার সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়। মৃত্যুবরণকারী শাখা সদস্যদের উদ্দেশে অনুষ্ঠানে নীরবতা পালন ও শোক প্রকাশ করা হয়।

বিএইচআরএফ আয়োজিত সম্মেলনে বৃহত্তর চট্টগ্রাম, তিন পার্বত্য জেলা, কক্সবাজার, কুমিল্লা, ঢাকা, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুরসহ সারা দেশের বিভিন্ন শাখা প্রতিনিধিসহ বিপুল সংখ্যক কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

প্রবীণ মানবাধিকার কর্মী সুনীল সরকারের সভাপতিত্বে ও মানবাধিকার আইনজীবী সৈয়দ মোঃ হারুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের বোর্ড অব ট্রাস্টি ও পরিচালক (অর্গানাইজিং) অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহ্সান। এছাড়া বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএইচআরএফ এর প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব ট্রাষ্টি মেম্বার অ্যাডভোকেট সরকার আসিফ পিয়াল। অনুষ্ঠানে আইন সহায়তা প্রাপ্ত ভিকটিম পরিবারের সদস্যরাও বক্তব্য রাখেন।

আগামী নির্বাচনে মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয়, সে দিকে গুরুত্ব দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সারাবছর দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ইস্যুতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। কিন্তু নির্বাচন কিংবা রাজনৈতিক ইস্যুতে এসব ঘটনা আরও বেশি হয়। এই বাস্তবতায় আগামী নির্বাচনকে ঘিরেও এমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশংকা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমুর্তি অক্ষুন্ন রাখতে মানবাধিকার রক্ষার দিকে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে সর্বসম্মতিক্রমে পরিচালক (অর্গানাইজিং) জিয়া হাবীব আহসানকে মহাসচিব নিযুক্ত করা হয়। এছাড়াও তিন পার্বত্য জেলা শাখা সহ অন্যান্য জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভা, বিভিন্ন ফোর্স কমিটি সহ সর্বমোট ৭৯টি শাখার কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সম্মেলনে একটি প্যানেল অ্যাডভোকেট টিম, একটি তথ্যানুসন্ধান টিম, মিডিয়া সেল, সালিশী কাউন্সিল, স্টুডেন্ট কাউন্সিল, রিসার্চ সেল, ভিকটিম রেসকিউ টিম, কালচারাল ফোর্স ও ওয়েলফেয়ার টিম গঠন করা হয়।

শাখা প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অ্যাডভোকেটএ এইচ এম জসিমউদদীন, ফোরকান আল হামিদী, মোজাম্মেল হক, অ্যাডভোকেট হাসান আলী, এইচ এম সারওয়ার্দী, কানিজ ফাতেমী লিমা, সৈয়দ সহারাব হোসেন, অ্যাডভোকেট আবসার প্রমুখ।

সম্মেলনে আন্তরিক সহায়তায় ছিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ হারুন, অ্যাডভোকেট প্রদীপ আইচ দিপু, হাসান আল বান্না, কে এম শান্তনু চৌধুরী, অ্যাডভোকেট উশিখা রাইসা, রিদুয়ানুল করিম নাভিল, অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন আরমান, ফটো সাংবাদিক এরশাদুল আলম।

অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ফটোসেশন অনুষ্ঠিত হয়।