৩০ হাজার নথি গায়েব : রাজউকের ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট
হাইকোর্ট ও রাজউক

৩০ হাজার নথি গায়েব : রাজউকের ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সার্ভার থেকে প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব হওয়ার ঘটনায় রাজউকের ব্যাখ্যা তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে রাজউক চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জমা দিতে বলা হয়েছে।

আজ সোমবার (২ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন।

প্রসঙ্গত, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আওতাধীন এলাকায় কোনো ভবন নির্মাণ করতে হলে সংস্থাটি থেকে ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র ও নির্মাণের অনুমোদন নিতে হয়। এই কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করতে হয় রাজউকের ওয়েবসাইট। অনলাইনে নিবন্ধন করে ভবনের নকশাসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র গ্রাহককে এই ওয়েবসাইটেই আপলোড করতে হয়।

পরে যাচাই-বাছাইসহ প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে এই ওয়েবসাইটেই ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র ও ভবনের নকশা আপলোড করে রাজউক। এগুলো ডাউনলোড করে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারেন গ্রাহক।

২০১৯ সালের মে মাস থেকে এমন আধুনিক পদ্ধতিতেই গ্রাহকদের সেবা দিয়ে আসছিল রাজউক। সংস্থাটির ওয়েবসাইটেও সব গ্রাহকের ভবনের তথ্য সংরক্ষিত ছিল। সম্প্রতি রাজউকের সার্ভার থেকে ভবন নির্মাণের অনুমোদনসংক্রান্ত প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের আবেদনের নথিপত্র গায়েব হয়ে গেছে।

সংস্থাটি জানায়, ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা ভবন নির্মাণের অনুমোদন পেতে আবেদন করেছিলেন, এখন তাদের নথিপত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু বিষয়টি জানতে এখন পর্যন্ত তদন্ত কমিটি গঠন করেনি রাজউক। এতে সংস্থাটির সদিচ্ছা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

গ্রাহকদের অভিযোগ, ৬ ডিসেম্বর হঠাৎ রাজউকের ওয়েবসাইট অকার্যকর হয়ে যায়। কিন্তু এ ঘটনা নিছক কারিগরি ত্রুটি নাকি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী জড়িত, সে বিষয়ে জানতে রাজউকের কোনো আগ্রহ নেই! অথচ এখন নতুন করে আবার আবেদন করতে গেলে দুর্নীতি, হয়রানির শিকার হতে হবে। রাজউকের এমন নীরব ভূমিকায়ই প্রশ্ন উঠেছে, তারা দুর্নীতি করতে ইচ্ছাকৃতভাবে নথিপত্র গায়েব করেছে।

তবে রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এত সংখ্যক আবেদন কীভাবে গায়েব হলো তা নিয়ে এখনো তারা অন্ধকারে রয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ এসব নথি পাওয়া না গেলে গ্রাহকরা নানা রকম ভোগান্তির শিকার হতে পারেন। তাই হারিয়ে যাওয়া সব নথি পুনরুদ্ধারে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় থানায় জিডিও (সাধারণ ডায়েরি) করেছেন তারা।