টেকনাফে সারেন্ডার করা ১০১ ইয়াবাকারবারীকে দেড় বছর করে কারাদন্ড 
এজলাস; সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল, কক্সবাজার।

মাদক মামলায় কক্সবাজারে এক আসামির ৭ বছর কারাদন্ড

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : ত্রিশ হাজার ইয়াবা টেবলেট পাচার এবং ৬৬ লক্ষ ১৫ হাজার ৫৫০ টাকা ইয়াবা বিক্রির নগদ টাকা উদ্ধারের মামলায় কক্সবাজারে এক আসামিকে ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। একইসাথে দন্ডিতকে ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এ রায় ঘোষণা করেন।

দন্ডিত আসামি হলেন- কক্সবাজারের টেকনাফের সাতঘরিয়া পাড়ার মোহাম্মদ হোসেনের পুত্র মোঃ আইজ উদ্দিন। দন্ডিত আসামি পলাতক রয়েছে।

এ মামলার অপর দুই আসামি একই এলাকার মোঃ হোসেনের ২ পুত্র যথাক্রমে মোঃ আইয়ুব ও মোঃ শামসুদ্দিনকে আদালত বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ এবং আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না আদালতে মামলাটি পরিচালনা করেন।

একই কার্যালয়ের জেলা নাজির বেদারুল আলম ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ

২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে বেলা ২ টা ১৫ মিনিটের দিকে র‍্যাব-৭ এর একটি টিম টেকনাফের সাতঘরিয়া পাড়ার মোঃ আইজ উদ্দিনের বাড়িতে এক অভিযান চালিয়ে মো: আইজ উদ্দিনকে আটক করে।

পরে মো: আইজ উদ্দিনের হাতে থাকা শপিং ব্যাগ তল্লাশি করে ৩০ হাজার ইয়াবা টেবলেট এবং একটি ট্রাভেল ব্যাগ থেকে ইয়াবা বিক্রির নগদ ৬৬ লক্ষ ১৫ হাজার ৫৫০ টাকা উদ্ধার করে। এসময় অভিযান টের পেয়ে মোঃ আইয়ুব ও মোঃ শামসুদ্দিন পালিয়ে যায়। উদ্ধারকৃত নগদ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম শাখায় জমা করা হয়।

এ ঘটনায় র‍্যাব-৭ এর ডিএডি মো: আবদুর রহমান বাদী হয়ে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ঘটনাস্থল থেকে ধৃত মো: আইজ উদ্দিন এবং মোঃ আইয়ুব ও মোঃ শামসুদ্দিনকে পলাতক আসামি করে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৫০/২০১৮ইংরেজি। জিআর মামলা নম্বর : ৫০২/২০১৮ ইংরেজি (টেকনাফ) এবং এসটি মামলা নম্বর : ১৪২/২০২১ ইংরেজি।

রায় ও বিচার

মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে ২০২১ সালের ১৫ মার্চ চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট যাচাই, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করা হয়।

রায় ঘোষণার দিনে বিচারক কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আসামি মো: আইজ উদ্দিন কে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১) সারণীর ৯(খ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ডের রায় ঘোষণা করেন।

একইসাথে দন্ডিতকে ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরো ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। মামলার অপর ২ আসামী মোঃ আইয়ুব ও মোঃ শামসুদ্দিন-কে আদালত বেকসুর খালাস প্রদান করেন।

রায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম শাখায় জমাকৃত ইয়াবা টেবলেট বিক্রির নগদ ৬৬ লক্ষ ১৫ হাজার ৫৫০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়।