ধর্ষণের ঘটনায় বাবাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে পর্যবেক্ষণে যা বললেন আদালত

ধর্ষণের ঘটনায় বাবাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে পর্যবেক্ষণে যা বললেন আদালত

চট্টগ্রামে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় নাছির মোল্লা নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক ফেরদৌস আরা বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে এ রায় দেন।

এদিকে রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত উল্লেখ করেছেন, আসামি পিতা ও কন্যার পবিত্র এবং শাশ্বত সম্পর্ককে কলুষিত করেছেন বিধায় তাকে দৃষ্টান্তমূলক সাজা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২০ এপ্রিল ভোরে শিশুটির মা কর্মস্থলে চলে গেলে পিতা নাছির মোল্লা তাকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় নাছিরের ১২ বছর বয়সি মেয়ে বাবার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে নগরীর পতেঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলায় নাছির মোল্লাকে গ্রেফতার করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ। তদন্ত শেষে পতেঙ্গা থানার এসআই বাবুল আক্তার ২০২১ সালের ২৪ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। আসামির সাফাই সাক্ষ্য ছাড়াও রাষ্ট্রপক্ষ মোট আটজনের সাক্ষ্য নেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক উল্লেখ করেছেন, ‘১২ বছর বয়সি শিশুটি আসামি নাছির মোল্লার ঔরসজাত কন্যা হওয়া সত্ত্বেও সজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে তাকে ধর্ষণ করেন এবং ভিকটিমকে নিজের কন্যা হিসেবে অস্বীকার করেন।’

পিতা কর্তৃক ধর্ষণের ফলে শিশু ভিকটিমের পৃথিবীর সব পুরুষের প্রতি ক্ষোভ ও অবিশ্বাস সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে; যার কারণে ভিকটিম শিশুর স্বাভাবিক জীবনযাপন ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

‘শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা পৃথিবীতে পিতা ও কন্যার সম্পর্ক পবিত্র এবং শাশ্বত। কন্যা তার পিতার নিকট সর্বাধিক নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হয়।’

আসামি তার ঔরসজাত কন্যাকে ধর্ষণ করে শাশ্বত, পবিত্র এ সম্পর্ককে কলুষিত করেছেন এবং পারিবারিক সম্পর্কের বন্ধন ও আস্থা-বিশ্বাসে আঘাত করেছেন। এর ফলে আসামির দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদান সমীচীন হবে বিধায় মৃত্যুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন জানান, শিশুকে ধর্ষণের দায়ে আদালত পিতাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাজা পরোয়ানা মূলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।