জেনেভায় ইউপিআর বৈঠকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আইনি ব্যাখ্যা দিল বাংলাদেশ
জেনেভায় ইউপিআর বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন

জেনেভায় ইউপিআর বৈঠকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আইনি ব্যাখ্যা দিল বাংলাদেশ

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সর্বজনীন নিয়মিত পর্যালোচনা বা ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।

জেনেভা থেকে যুক্ত হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সোমবার (১৩ নভেম্বর) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা জানান।

আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতার পাশাপাশি কমিশনকে শক্তিশালী করার জন্য সরকারের নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে উপস্থিত সবাইকে অবহিত করেছি। নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আইনি ব্যাখ্যা আমি সভায় উপস্থাপন করেছি।

জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ইউপিআর ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে অংশ নেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।

বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জেনেভা থেকে যুক্ত হন মন্ত্রী আনিসুল হক ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, রিভিউয়ে শ্রমিক অধিকার, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, মানবাধিকার সম্পর্কিত কিছু ইনস্ট্রুমেন্টসে আমাদের সম্ভাব্য র‍্যাটিফিকেশন, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে অগ্রিম প্রশ্ন ছিল। আমি যথাযথভাবে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছি। বিভিন্ন প্রতিকূলতা স্বত্বেও সুশাসন, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার কাজ করে যাবে বলে আমি কাউন্সিলকে জানিয়েছি।

তিনি বলেন, সভায় নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, খাদ্য নিরাপত্তা, সবার জন্য আবাসন, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা বহুল প্রশংসিত হয়েছে। এ ছাড়া ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।

আইনমন্ত্রী বলেন, সভায় ১১১টি দেশ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ৯০টি দেশ বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রশংসা করেছে। স্লোভাকিয়া ও কানাডা ছাড়া অন্য কোনো দেশ কড়া সমালোচনা করেনি। সভায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও বেলজিয়াম বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে আলোচনা তুলেছে। তারা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের কথা বলেছে।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

জেনেভায় ইউপিআর ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক গত ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। এ বৈঠক আগামী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এবারের ইউপিআর ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে ১৪টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে, এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।

এর আগে বাংলাদেশের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ইউপিআর হয়েছিল যথাক্রমে ২০০৯, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে। মানবাধিকার কাউন্সিলের ৪৭টি দেশ ইউপিআর ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য। তবে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের প্রত্যেকটিই পর্যালোচনায় অংশ নিতে পারে।