শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট

আয়ানের মামলায় পক্ষভুক্ত হচ্ছেন ইউনাইটেড হাসপাতালে সন্তান হারানো এক মা

রাজধানীর বনানীর বাসিন্দা সিফাত-ই রব্বানী। তার দাবি ২০১৫ সালে স্বাভাবিকভাবে গর্ভের সন্তান জন্ম দিতে তিনি গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে যান। সন্তান জন্মের পর প্রথমে ২৪ ঘণ্টা অবজারভেশনে রাখার কথা বলে শিশু সন্তানকে আলাদা করে রাখা হয়। এভাবে দেড় মাস নবজাতক সন্তানকে অবজারভেশনে রেখে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। দেড় মাস পর নবজাতক শিশুটিও মারা যায়।

সিফাত-ই রব্বানী বলেন, চিকিৎকদের ভুল চিকিৎসার কারণে আমি নবজাতক সন্তানকে হারিয়েছি। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই, শিশু আয়ান হত্যার বিচার চাই। বিচার চাইতে হাইকোর্টে এসেছি।

শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা রিট মামলার আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ বলেন, শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় রিট মামলায় সিফাত-ই রব্বানীকে পক্ষভুক্ত করার আবেদন করা হবে।

রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খৎনার জন্য অজ্ঞান করা শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ছিল আজ বৃহস্পতিবার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় আদালত আগামী রোববার (২৮ জানুয়ারি) পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আয়ানের মামলায় পক্ষভুক্ত হচ্ছেন ইউনাইটেড হাসপাতালে সন্তান হারানো এক মা

এদিকে গত ১৫ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক নির্দেশে জানতে চান, ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন পর্যন্ত কত রোগী মারা গেছে। এ বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে সিফাত-ই রব্বানীর নজরে এলে তিনি আজ বিচার চাইতে হাইকোর্টে আসেন। তখন তার আইনজীবী বলেন, আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় রিট মামলায় সিফাত-ই রব্বানীকে পক্ষভুক্ত করার আবেদন করা হবে।

শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে ১৫ জানুয়ারি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।

পাশাপাশি দেশের সব সরকার অনুমোদিত ও অন অনুমোদিত হাসপাতাল ক্লিনিকের তালিকা ১ মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আগের দিন ১৪ জানুয়ারি শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিটের শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়।

এদিকে আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের গাফিলতির অভিযোগ তদন্তে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত ৮ জানুয়ারি লাইফ সাপোর্টে থাকা শিশু আয়ান মারা যায়। টানা ৭ দিন লাইফ সাপোর্টে ছিল আয়ান।