মাদারীপুর করা মানহানি ও তথ্য প্রযুক্তি আইনের দুই মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার (নভেম্বর ২৮) বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিন দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো.আসাদুজ্জামান।
আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান জানান, আসিফ নজরুলকে মানহানির মামলায় দশ সপ্তাহের এবং তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় অভিযোগপত্র দাখিলের পূর্ব পর্যন্ত জামিন দেয়া হয়।
২৩ নভেম্বর দুপুরে ৫০০ ও ৫০১ নম্বর ধারায় মানহানির মামলাটি করেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের চাচাতো ভাই ও জেলা পরিষদের সদস্য মো. ফারুক খান।
চট্টগ্রাম বন্দরে লস্কর নিয়োগ নিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে এ মানহানির মামলা করেন তিনি।
অপরদিকে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান সম্পর্কে ‘মিথ্যা তথ্য’ দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে মন্ত্রী শাজাহান খানের ভাগ্নে সৈয়দ আসাদ-উজ-জামান ২১ নভেম্বর আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় মামলাটি করেন। ২৭ নভেম্বর সকালে মামলাটি থানায় নথিভুক্ত হয়।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ড. আসিফ নজরুল তার ফেসবুকে উল্লেখ করেছেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়োগ পরীক্ষায় ৯২ জন উত্তীর্ণ হয়েছে, যার মধ্যে ৯০ জন নৌপরিবহন মন্ত্রীর এলাকা মাদারীপুরের বাসিন্দা। অথচ উনি চাইলে ৯২ জনই উনার এলাকার লোক হতে পারতো। ২ জন ভিন্ন এলাকার লোক নিয়োগ দিয়ে উনি সততার যে দৃষ্টান্ত দেখালেন তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’
এতে নৌমন্ত্রীর সম্মানহানি হওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রীর পরিবার, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সামাজিক ব্যক্তিত্বসহ দলমত নির্বিশেষে সবার মনে ক্ষোভ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। এতে মন্ত্রীর ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক মান ক্ষুণ্ন হয়েছে।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল হাসান বলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রীর ভাগ্নে সৈয়দ আসাদ-উজ-জামান ২১ নভেম্বর থানায় ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন। তখন আমরা অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুমতির জন্য পাঠাই। ২৬ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পেয়ে সোমবার অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করি।
মানহানি মামলায় মাদারীপুর আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া জানান, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগ এনে মাদারীপুর আদালতে মামলাটি (মামলা নম্বর ৪০০/২০১৭) দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে সমন জারি করেছেন।
সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম