পুলিশের যে কোনও অপারেশন, চেকপোস্ট ও গুরুত্বপূর্ণ ডিউটিতে পুলিশ সদস্যদের পোশাকের সঙ্গে থাকবে লাইভ ক্যামেরা। অপারেশন বা ডিউটিরত অবস্থায় ওয়ারলেস এর মাধ্যমে যে কোনও সময়, সেই ক্যামেরার অ্যাক্সেস নিতে পারবে পুলিশ সদর দফতর। দিতে পারবে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও।
পুলিশ সদর দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সবগুলো ক্যামেরা কন্ট্রোলের জন্য পুলিশ সদরদফতরে থাকবে একটি মনিটরিং সেল। সারাদেশে যে কোনও জায়গায় ডিউটিরত অবস্থায় পুলিশ সদস্য থাকবে অন ক্যামেরায়। পুলিশ সদরদফতর ও সংশ্লিষ্ট জেলা মনে করলে, সুনির্দিষ্ট ওই পুলিশ কর্মকর্তা বা ইউনিটের কর্মকাণ্ড দেখতে পারবেন। তাছাড়া ক্যামেরা সঙ্গে ইয়ারফোন যুক্ত থাকায় প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিতে পারবেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও।
এর ফলে, পুলিশের যে কোনও অভিযান, অপারেশন, বিশেষ করে চেকপোস্টে পুলিশ সদস্য বা কর্মকর্তাদের নির্দেশনার প্রয়োজন পড়লে সরাসরি পুলিশ সদরদফতর তাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারবে। ইতোমধ্যে আধুনিক ও স্মার্ট পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশে অত্যাধুনিক অপারেশনাল গিয়ার টেকটিক্যাল বেল্ট সংযোজিত হয়েছে।
পুলিশ সদরদফতরের সংশ্লিষ্ট শাখা বলছে, এই ট্যাকটিক্যাল বেল্টের সঙ্গেই ওই ক্যামেরাটি সংযুক্ত হবে। আর তার সঙ্গে এই ইয়ারফোনও থাকবে। সেগুলো একটিভ করেই ডিউটি শুরু করবে পুলিশ সদস্য।
পুলিশ সদরদফতরের একজন ঊর্ধ্বতন জানান, আধুনিক পুলিশ হিসেবে পুলিশের সব ধরনের কাজেই এ ক্যামেরা কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। ক্যামেরায় কোনও ঘটনার লাইভ মনিটরিং করার পাশাপাশি বিভিন্ন কোণ থেকে ছবিও নিতে পারবে। সেক্ষেত্রে কাজের স্বচ্ছতা আসবে ও গতি বাড়বে।
বাংলাদেশ পুলিশে নব সংযোজিত সর্বাধুনিক অপারেশনাল গিয়ার ‘টেকটিক্যাল বেল্ট’ উদ্বোধনের দিনে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, উন্নত দেশের দায়িত্ব পালনকালে সাধারণত যেসব সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতে হয় তা এ বেল্টে এমনভাবে সংযোজন করা হয়েছে যাতে তারা ‘হ্যান্ডস ফ্রি’ রেখে দায়িত্ব পালন করতে পারেন। এর ফলে উন্নত দেশের পুলিশের ন্যায় বাংলাদেশ পুলিশের গেট আপে পরিবর্তন আসবে, পুলিশের দক্ষতা বাড়বে এবং জনগণকে আরও সহজে তাৎক্ষণিক সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
পুলিশ সদস্যদের এই লাইভ ক্যামেরা সম্পর্কে আইজিপি বলেন, বডি অন ক্যামেরাটি ডিএমপি পুলিশে পাঁচ বছর আগেই যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা সেভাবে বিস্তার করা সম্ভব হয়নি। এটা এখন করা হবে। তবে এটা অনেক ব্যয়বহুল, আমরা চাইলেও একবছর মধ্যে সব পুলিশকে দিতে পারবো না। তারপরেও আমরা পর্যায়ক্রমে এই বডি অন ক্যামেরাটি নিয়ে আসছি। এতে আমরা সর্বপ্রথম ট্রাফিক পুলিশদের প্রাধান্য দেবো। তারপর চেকপোস্টগুলোতে দেবো। পর্যায়ক্রমে এটা অন্য সদস্যদের দেওয়া হবে।
পুলিশের এই সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বলেন, বডি অন ক্যামেরা এবছর থেকেই শুরু করছি। ইতিমধ্যে টেন্ডার লঞ্চিংয়ের প্রসেসে আছি। ইকুইপমেন্ট গুলো সংগ্রহ করার সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রথমে ট্রাফিক পুলিশ ও চেকপোস্টে ব্যবহার করা শুরু করবো। আগামীতেও পুলিশে আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজনের ধারা অব্যাহত থাকবে।
এই নতুন ক্যামেরার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতর লজিস্টিক শাখার অতিরিক্ত এসপি ফয়জুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বডি অন ক্যামেরা আমদানি করার কথা চলছে। এটা আরও তিন মাসের মত সময় লাগবে। আশা করছি আগামী মার্চে বডি অন ক্যামেরা কেনা শুরু হবে। সূত্র- বাংলা ট্রিবিউন