সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সদ্য নিয়োগ পাওয়া তিন বিচারপতিকে সংবর্ধনা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়। রোববার (১১ ডিসেম্বর) সকালে আপিল বিভাগের ১ নং এজলাস কক্ষে তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের রীতি অনুযায়ী, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির নতুন বিচারপতিদের গৌরবময় কর্মজীবন পড়ে শোনান।
এরপর সংবর্ধনার জবাবে আপিল বিভাগে নতুন নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম বক্তব্য রাখেন।
এসময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতি ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তিনজনকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। তার নির্দেশক্রমে তাদের নিয়োগ দিয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি হাইকোর্ট বিভাগের কর্মরত তিনজন বিচারককে তাদের শপথ গ্রহণের তারিখ হতে আপিল বিভাগে বিচারক নিয়োগ করেছেন।
পরে ৮ ডিসেম্বর বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে নতুন নিয়োগ পাওয়া বিচারপতিদের শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত ৩ বিচারপতির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি নিম্নরূপ-
বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম
আশফাকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৩ সালে জেলা আদালত ও ১৯৮৫ সালে হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
পরে ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর ২০০৫ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
তিনি আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, ভারত, ইতালি, তুরস্ক, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড, চেক রিপাবলিক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, নেপাল, ভূটান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন।
এছাড়া তিনি ২০১১ সালে কোরিয়াতে জুডিসিয়াল ডেভেলপমন্টে প্রোগ্রাম অংশ নেন।
বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের বাবা সাবেক উপ রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এ কে এম নুরুল ইসলাম।
বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী
মো. আবু জাফর সিদ্দিকী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৫ সালে জেলা আদালতে এবং ১৯৯৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি এবং দুই বছর পর ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
তিনি ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ সফর করেন। এছাড়া তিনি ২০১১ সালে কোরিয়াতে জুডিসিয়াল ডেভেলপমন্টে প্রোগ্রাম অংশ নেন।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন
জাহাঙ্গীর হোসেন এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৬ সালের ৩১ অক্টোবর জেলা আদালতে এবং ১৯৯১ সালের ৩১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। পরবর্তীতে ২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি এবং দুই বছর পর ২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
তিনি অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, নেপাল, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভারত ও মালয়েশিয়া সফর করেছেন।
প্রসঙ্গত, প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে ছয়জন বিচারপতি ছিলেন। নতুন তিন বিচারপতি নিয়োগের মাধ্যমে আপিল বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা দাঁড়াল নয় জনে। তবে এরদের মধ্যে একজন ছুটিতে রয়েছেন। ফলে কার্যত বিচারপতি আছেন ৮ জন।