একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর সাবেক রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) নিবন্ধন দিতে বলা হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আপিলেরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রোববার (২৮ মে) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বিধিমালা অনুসরণ না করায় ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
১৯৯১ সালে এনডিপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত সাকা চৌধুরী ১৯৯৬ সালে বিএনপিতে যোগ দিলেও তার নাম দিয়ে ওই শর্ত পূরণ করে ‘বাঘ’ প্রতীকে নিবন্ধন চায় এনডিপি। কিন্তু সাকা চৌধুরী দলে না থাকায় তৎকালীন কমিশন নিবন্ধন আটকে দেয়।
এরপর এনডিপির মহাসচিব আলমগীর মজুমদার ইসিকে জানান, ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এনডিপি ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাঘ প্রতীক নিয়ে পাবনা-২ আসনে দলের চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্তুজা ও চট্টগ্রাম-৬ আসনে তখনকার মহাসচিব সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ অনেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
১৯৯৬ সালে সাকা চৌধুরী বিএনপিতে যোগ দিলেও দলের ধারাবাহিকতায় ছন্দপতন ঘটেনি বলে দাবি করেন আলমগীর। তারপরও ওই বছর নভেম্বরে ইসি জানিয়ে দেয় এনডিপি নিবন্ধনের যোগ্য নয়। এরপর ২০১৩ সালের ৭ জুলাই হাইকোর্ট ওই রুলের নিষ্পত্তি করে এনডিপির পক্ষে রায় দেন। তবে সে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক জীবনে সাকা চৌধুরী ১৯৭৯ সালে মুসলিম লীগের মনোনয়নে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে এবং ১৯৯১ সালে নিজের গড়া এনডিপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর বিএনপির হয়ে ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।