বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও আঞ্চলিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে একজন দক্ষ ও স্বতন্ত্র প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নিয়োগের দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।
আজ রোববার (২২ জুন) রেজিস্ট্রি ডাক ও ইমেইলের মাধ্যমে প্রেরিত এ নোটিশে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারকে বিবাদী করা হয়েছে।
স্বাধীনতার ৫০ বছরেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নেই
নোটিশে বলা হয়, স্বাধীনতার ৫০ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশে এখনো স্বতন্ত্র প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়নি। বরাবরই প্রধানমন্ত্রী অথবা বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টা-ই প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন, যা প্রশাসনিকভাবে অকার্যকর এবং সংবিধানের মূল উদ্দেশ্যের পরিপন্থী।
এই অনিয়মের ফলে প্রতিরক্ষা কৌশল ও সামরিক কূটনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
আঞ্চলিক উত্তেজনা ও নিরাপত্তা হুমকি
নোটিশে ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা তুলে ধরে বলা হয়—
-
পূর্বদিকে মিয়ানমার: রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সামরিক বাহিনীর সংঘাতে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে বারবার মর্টার ও গুলির ঘটনা ঘটছে।
-
পশ্চিমে ভারত: বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু এবং পুশ-ইন (Push-in) এর মাধ্যমে অনুপ্রবেশ দেশের জনসংখ্যা ও নিরাপত্তার ভারসাম্য বিঘ্নিত করছে।
এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক একটি পূর্ণ মন্ত্রণালয়িক নেতৃত্ব অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে দাবি করা হয়।
সেনা কর্মকর্তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী করার প্রস্তাব
নোটিশে সুপারিশ করা হয়,
-
অবসরপ্রাপ্ত কোনো অভিজ্ঞ সেনাপ্রধানকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী,
-
এবং অবসরপ্রাপ্ত কোনো নৌ বা বিমান বাহিনীর প্রধানকে উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।
এছাড়া, সংবিধানের ২১(২) অনুচ্ছেদের আলোকে সরকারি দায়িত্ব পালনে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।
১০ দিনের সময়সীমা, নইলে রিট
আইনি নোটিশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, ১০ কার্যদিবসের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।