যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়ে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বাংলাদেশের সমালোচনা

গত বছর পাকিস্তানে সার্ক সম্মেলন স্থগিত হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে বাংলাদেশের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও সমালোচনা করেছেন তিনি। তবে পাকিস্তান প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চায় দাবি করে তিনি বলেছেন, ঢাকার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইসলামাবাদ। এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক খবর থেকে এসব কথা জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার দেশটির জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের ব্যাপারে সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের জবাব দেন খাজা আসিফ।

গত বছর দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সম্মেলনের (সার্ক) আয়োজনের কথা ছিল পাকিস্তানের। তবে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ওই সম্মেলন স্থগিতের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। ২৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সার্ক সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের হস্তেক্ষেপকে দায়ী করেন। তবে ওই আয়োজন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের ওপর দায় চাপিয়েছেন পাক এই মন্ত্রী। তিনি বলেন, সার্কের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অন্তঃর্ঘাতে ইন্ধন দিয়েছে ঢাকা।

১৯৭৪ সালে দিল্লিতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ভারত-পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়। চুক্তির ১৩ আর্টিকেলে বলা আছে, ওই সময় সংঘটিত যে কোনও অপরাধের তীব্র নিন্দা জানায় পাকিস্তান। চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে

তবে বৃহস্পতিবার জাতীয় পরিষদে খাজা আসিফ বলেন, ‘১৯৭৪ সালে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়ন করছে না বাংলাদেশ। গত কয়েক বছরে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করেছে ঢাকা।’ তিনি বলেন, ‘ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ধারাবাহিকভাবে আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তান সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চায়, কিন্তু অন্য পক্ষ্যকেও আমাদের এই প্রচেষ্টায় শামিল হতে হবে।’

জাতীয় পরিষদে খাজা আসিফ বলেন, ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইসলামাবাদ। বাংলাদেশসহ আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে কোনো ধরনের উত্তেজনা চায় না পাকিস্তান। তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের প্রথমার্ধ্বেই বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ষষ্ঠ পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক রাজনৈতিক বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে পারে। এই বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের মাঝে সম্পর্ক জোরদারের সুযোগ তৈরি হবে বলে প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

সূত্র- বাংলা ট্রিবিউন