অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ সচিব জিন্নাত রেহানাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ সচিব জিন্নাত রেহানা সাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ এর ১১ (১) ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. ফারজানা ইসলামকে ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ প্রদান করেছেন।’
এ নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) ড. শরীফ এনামুল কবির ও নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ড. লুতফর রহমান।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম মঞ্জুর আলম।
পরে মঞ্জুর আলম বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ এর ১১ (১) ধারা অনুসারে ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগের জন্য তিন সদস্যদের প্যানেল মনোনয়ন করতে হবে। কিন্তু এখানে সেটা করা হয়নি। তাই দুই শিক্ষকের রিটের প্রেক্ষিতে আদালত এক সপ্তাহের রুল জারি করেছেন। বিশেষ বার্তা বাহকের মাধ্যমে আদালতের এ আদেশ বিবাদীদের কাছে পাঠাতে হবে।
এর আগে ২০১৪ সালের ২ মার্চ ভিসি প্যানেলে নির্বাচিত হয়ে দেশের প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। যার মেয়াদ ছিলো আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত। এর আগেই ১৮ ফেব্রুয়ারি তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
ড. ফারজানা ইসলাম ১৯৫৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার গ্রামের বাড়ি শরিয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার আরশিনগর গ্রাম। তিনি ১৯৭৩ সালে ধানমন্ডি সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি, ১৯৭৫ সালে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি বিএসএস (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে এবং পরবর্তী বছর ১৯৮০ সালে এমএসএস (স্নাতকোত্তর) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন।
তিনি ১৯৮২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ১৯৮৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন এবং ২০০৬ সালে তিনি অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন।