ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার টাকা আত্মসাৎ: অডিট করতে বললেন হাইকোর্ট
ভ্রাম্যমাণ আদালত

সরকারি কোষাগারে ৭৬ লাখ টাকা জমা করেছে লোহাগাড়ার মোবাইল কোর্ট

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় নয় মাসে মোবাইল কোর্টের আওতায় ৭৬ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তথা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এসব অর্থ সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে।

ইউএনও অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে এ উপজেলায় মো: মাহবুব আলম নামে একজন ইউএনও যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পর থেকে এলাকায় সরকারি স্বার্থ রক্ষা নিয়ে কাজ শুরু করেন। এক বছর তিনি এ উপজেলায় কাজ করেন। সম্প্রতি তিনি বদলী হয়ে অন্য উপজেলায় চলে যান। নয় মাসে তিনি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, আইন শৃঙ্খলা ও সরকারি স্বার্থ রক্ষার্থে ১৪৬টি মোবাইল কোর্টের আওতায় ৯৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।

উক্ত মোবাইল কোর্টে জরিমানা ও জব্দকৃত মালামাল হতে প্রাপ্ত অর্থসহ ৪৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭০০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়। অন্যদিকে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের আওতায় ৩২টি মামলায় জরিমানাসহ অবৈধভাবে উত্তোলিত ২০টি জব্দকৃত বালির স্তুপ নিলামে বিক্রি করে ১৭ লাখ ৮২ হাজার ৮০০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়। বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে বালি পরিবহনকারী ট্রাকগুলোকে মোটরযান আইনে শাস্তি প্রদান করে জরিমান করা হয় ৩ লক্ষাধিক টাকা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় বিভিন্ন মেয়াদে ২১ জনকে ৯০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হয়। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনে ১৫ জনকে ১০ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হয়। দণ্ডবিধির ১৮৬০-এর আওতায় ১২ জনকে জরিমানা করা হয় ৭৪ হাজার ২০০ টাকা। আর ২৪ জনকে দেয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা।

এছাড়া হাইওয়ে আইনে ১০টি, বন আইনে ১০টি, স্থানীয় সরকার আইনে ৮টি, পণ্য পাটজাত আইনে ৬টি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ৩টি, বিদ্যুৎ আইনে ২টি, জন্ম নিবন্ধন আইনে ১টি, জলাধার সংরক্ষণ আইনে ১টি, ওজন পরিমাপ আইনে ১টি ও জুয়া আইনে ১টি সাজা প্রদান করা হয়।

উল্লেখিত উদ্যোগসমুহের কারণে উপজেলায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, আইন শৃংখলা ও সরকারি স্বার্থ রক্ষা হয়। অল্প সময়ের মধ্যে ৯টি ইউনিয়নভূক্ত লোহাগাড়া উপজেলায় এতো টাকা সরকারি কোষাগারে জমাদান উপজেলার ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুব আলম জানান, অন্যায়কে প্রশ্রয় না দিয়ে আপোসহীন থেকে অবৈধ বালুমহালসহ বিভিন্ন খাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে উক্ত টাকা সরকারি কোষাগারে জামা করা হয়। মোবাইল কোর্ট আইন প্রয়োগ করে উপজেলার সার্বিক আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার সম্যক চেষ্টা করা হয় বলে তিনি জানান।