আইয়ুব বাচ্চু

হাইকোর্ট মাঠে আইয়ুব বাচ্চুর জানাজা শুক্রবার

সংগীতশিল্পী এবং ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চুর জানাজা আগামীকাল শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে। শিল্পীর ছোট ভাই ইরফান চৌধুরী জানিয়েছেন, রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ সংলগ্ন হাইকোর্ট মাঠে জুমার নামাজের পর আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তার মেয়ে এবং জামাই আসলে তাকে চট্টগ্রামে নেয়া হবে। শনিবার (২০ অক্টোবর) চট্টগ্রামে জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হসপিটালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আইয়ুব বাচ্চু। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।

আইয়ুব বাচ্চুর স্বজনরা জানান, সকালে নিজ বাড়িতে স্ট্রক করলে তাকে স্কয়ার হসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

এদিক স্কয়ার হাসপাতালের ডা. মির্জা জানান, আইয়ুব বাচ্চুর ড্রাইভারই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন জরুরি বিভাগে নেওয়া হয় তাঁকে। সেই সময় তাঁর মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল। জরুরি বিভাগেই মৃত অবস্থায় তাঁকে দেখতে পান হাসাপাতালের চিকিৎসকরা।

ডা. মির্জা বলেন, ‘আইয়ুব বাচ্চু বহুদিন থেকে হৃদরোগে ভুগছেন। সাধারণ মানুষের চেয়েও কম রক্তচাপ ছিল তাঁর হার্টের, সর্বনিম্ন ছিল ত্রিশের ঘরে। এই রোগটির নাম কার্ডিও-মাইওপ্যাথি।’

হৃদরোগের কারণে আইয়ুব বাচ্চু গত কয়েক বছর বারবারই হাসপাতালে এসেছেন চিকিৎসার জন্য। ডা. মির্জা আরো জানান, ‘২০০৯ সালে তাঁর হার্টে রিং পরানো হয়। দুই সপ্তাহ আগে শেষ তিনি স্কয়ার হাসপাতালে এসেছিলেন।’

১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরে জন্মগ্রহণ করেন এ গুণী শিল্পী। সংগীত জীবনের দীর্ঘ চার দশকে অসংখ্য হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গান তিনি উপহার দিয়েছেন শ্রোতাদের।

সঙ্গীত জগতে তার যাত্রা শুরু হয় ‘ফিলিংস’-ব্যান্ডের মাধ্যমে ১৯৭৮ সালে। তাঁর কন্ঠ দেয়া প্রথম গান “হারানো বিকেলের গল্প”। গানটির কথা লিখেছিলেন শহীদ মাহমুদ জঙ্গী।

১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালে তিনি জনপ্রিয় ব্যান্ড সোলস এর সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত রক্তগোলাপ আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। এই অ্যালবামটি তেমন একটা সাফল্য পায়নি। আইয়ুব বাচ্চুর সফলতার শুরু তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ময়না (১৯৮৮) এর মাধ্যমে।

১৯৯১ সালে বাচ্চু এল আর বি ব্যান্ড গঠন করে। এই ব্যান্ডের সাথে তার প্রথম ব্যান্ড অ্যালবাম এল আর বি প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালে। এটি বাংলাদেশের প্রথম দ্বৈত অ্যালবাম। এই অ্যালবামের “শেষ চিঠি কেমন এমন চিঠি”, “ঘুম ভাঙ্গা শহরে”, “হকার” গানগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে। পরে ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যান্ড অ্যালবাম সুখ ও তবুও বের হয়। সুখ অ্যালবামের “সুখ, “চলো বদলে যাই”, “রূপালি গিটার”, “গতকাল রাতে” উল্লেখযোগ্য গান।

আইয়ুব বাচ্চুর জনপ্রিয়তম গাণগুলোর অন্যতম “চলো বদলে যাই” গীতিকার ও সুরকার তিনি নিজেই।

মূলত রক ঘরানার কন্ঠের অধিকারী হলেও আধুনিক গান, ক্লাসিকাল সঙ্গীত এবং লোকগীতি দিয়েও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন আইয়ুব বাচ্চু। তার কণ্ঠে গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে, ’চলো বদলে যাই’, ‘রূপালি গিটার’ ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’ ‘ঘুম ভাঙ্গা শহরে’, ‘হকার’ ‘অবাক হৃদয়’ ‘আমিও মানুষ’ ‘কষ্ট কাকে বলে’, ‘সুখ’, ‘মন চাইলে মন পাবে’সহ অসংখ্য গান।