আটক
আটক (প্রতীকী ছবি)

ফেনীতে মাদ্রাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টায় মামলা, আটক ৭

ফেনীর সোনাগাজীতে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে মাদ্রাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় তিন দিন পর থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে পাঁচজনকে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন: ওই মাদ্রাসার ইংরেজির প্রভাষক আফছার উদ্দিন (৩৩), আলিম পরীক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম (২২), মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফা (৩৮), অফিস সহকারী নুরুল আমিন (৫০) এবং স্থানীয় আলাউদ্দিন (২৫), সাইদুল ইসলাম (২১), জসিম উদ্দিন (৩০)।

ঘটনার দিন থেকে শুরু করে সোমবার পর্যন্ত থানা-পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এই সাতজনকে আটক করেছে। তবে এঁদের মধ্যে আফছার উদ্দিন ও আরিফুল ইসলামকে আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় সোমবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে থানায় পাঠানো ছাত্রীর ভাইয়ের লিখিত অভিযোগকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় চারজন অজ্ঞাতনামা ছাত্রীসহ তাদের সহযোগীদের আসামি করা হয়।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৭ মার্চ বুধবার সকাল ১০টায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ওই ছাত্রীকে ডেকে তাঁর কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন। ওই ঘটনায় ছাত্রী মা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন। এর পর থেকে অধ্যক্ষের অনুগত একটি মহল মামলা তুলে নিতে ছাত্রীর পরিবারকে চাপ ও হুমকি দিতে থাকে। গত শনিবার ওই ছাত্রী পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় এসে হলে তাঁর প্রবেশ পত্রসহ একটি ফাইল টেবিলের ওপর রেখে হলের বাইরে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। এ সময় একটি মেয়ে তাঁর বান্ধবীকে মারা হচ্ছে বলে তাঁকে ডেকে প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলার ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে বোরকা, মুখোশ ও হাত মোজা পরা এবং মুখ ঢাকা চারজনকে দেখতে পায়। একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে তারা জোর করে পাশের টয়লেটে নিয়ে গিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, গত ২৭ মার্চ তারিখে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করার পর থেকে নুর উদ্দিন, জাবেদ, শাহাদাত হোসেন শামীম, মহি উদ্দিন শাকিলসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়।

ওই ছাত্রীর ভাই বলেন, তাঁদের ধারণা হুমকিদাতাদের যোগসাজশে চারজন তাঁর বোনকে পরিকল্পিতভাবে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে।

সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্য থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুজনকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে মর্মে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।