পারিবারিক সহিংসতা আইনে বরিশালে প্রথম মামলা

বরিশালে বাড়ি থেকে দুই মেয়েসহ বের করে দেয়ার অভিযোগে দ্বিতীয় স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক নারী। পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনে বরিশালে এটি প্রথম মামলা।

সম্প্রতি বরিশালের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পারিবারিক সহিংসতা ও সুরক্ষা আইন, ২০১০ -এর ১৩,১৪,১৫ ধারায় অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করা হয়।

মামলার বাদী মোসা: সুমী (৩৭) এবং একমাত্র আসামি তাঁর দ্বিতীয় স্বামী মোঃ নাসির উদ্দিন (৩৪)।

বাদীর জবানবন্দি শুনে আমলি আদালত-১ এর বিচারক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আনিসুর রহমান মামলাটি আমলে নেন। একইসঙ্গে আদালত আসামির বিরুদ্ধে নোটিশ জারির নির্দেশ দেন।

পাশাপাশি আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ পর্যন্ত বাদী যেন আসামির বাড়িতে নির্বিঘ্নে শান্তিতে স্বাভাবিক জীবন-যাপন ও চলাফেরা করতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে বরিশাল উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এছাড়া এ কাজে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে সম্পূর্ণ আইনানুগ সহযোগিতা করতে কোতয়ালী থানার অফিসার ইন চার্জকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

বরিশালের সহকারী পিপি অ্যাডভোকেট ইশতিয়াক রকি মামলার বিষয়টি ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে নিশ্চিত করে জানান, বরিশালে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন,২০১০ এর অধীন এটিই প্রথম মামলা।

আগামী ২৮ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে বলেও জানান সহকারী পিপি।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে বাদীর প্রথম স্বামী মারা যান। এরপর ২০১৭ সালের বর্তমান স্বামী নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বাদীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই দ্বিতীয় স্বামী বাদীর মালিকানাধীন বাড়ীতেই বসবাস করে আসছিলেন।

নাসির উদ্দিনের প্রকাশ্য জীবিকা না থাকায় বাদীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর চাপ প্রয়োগ করে বাদীর ভোগ-দখলীয় ৮ শতাংশ জমির তিন শতাংশ হেবা দলিলের মাধ্যমে জোরপূর্বক আসামি নিজ নামে রেজিস্ট্রি করে নেয়।

চলতি বছরের গত ১২ ডিসেম্বর আসামি বাদীর কাছে ফের ৫ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামি বাদীকে তাঁর দুই মেয়েসহ (প্রথম স্বামীর) খুন জখমের হুমকি দেয়। একইসঙ্গে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

এরপর একাধিকবার বাড়িতে বসবাস করতে চাইলে আসামির সশস্ত্র বাধায় তা সম্ভব হয়নি। এমতাবস্থায় বাদী পারিবারিক সহিংসতা আইনে সুরক্ষা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন।