স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে 'আইনজীবী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ২০২১'
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে 'আইনজীবী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ২০২১'

নির্দিষ্ট সময়ে মামলা শেষ না হলে মানুষের ভোগান্তি বাড়ে: বিচারপতি ওবায়দুল হাসান

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মামলা শেষ না করতে পারলে মানুষের ভোগান্তি বাড়ে বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক ওবায়দুল হাসান। এ সময় তিনি দেওয়ানী কার্যবিধি সংশোধনের তাগিদ দেন। পাশাপাশি আইন কমিশনে অ্যাটর্নি জেনারেলকে বা অন্য কোন ল’ জুরিস্টকে যুক্ত করার অনুরোধ জানান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে ‘আইনজীবী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শনিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মামলা শেষ না করতে পারলে মানুষের ভোগান্তি বাড়ে। এটা ভুক্তভোগী ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারে না। বিশেষ করে দেওয়ানী কার্যবিধি সংশোধন হচ্ছে না এখনও। অথচ ব্রিটিশ ল প্রতি মুহূর্তে সংশোধন করে। তো আমরা কেন করি না? তাই ল’ কমিশনে অ্যাটর্নি জেনারেলকে বা অন্য কোন ল’ জুরিস্টকে যুক্ত করার অনুরোধ জানাই। তাহলে দেশে ভালো আইন বা আইনের সুপারিশ তৈরি হবে।’

আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এক সময় সংসদের অধিকাংশ সদস্য ছিলেন ল’ ইয়ার। রাজনীতি করতেন ল’ ইয়াররা। ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন ল’ ইয়াররা। আর এখন সংসদে ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য। এই কারণে আজ একটি আইন হলে কাল একটি ডিফেক্ট বেরিয়ে যায়। অনেকে না পড়েই আইন পাশ করেন। তাদের পড়ার সময় নেই। কিন্তু একজন ল’ ইয়ার হলে কোনও আইন হাতে পেলে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তেন, আইনের ডিফেক্ট খুঁজে বের করতেন। সমাজে আইনটির প্রভাব কি হবে তা বের করতেন।

নবীন আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, আইন পেশায় আসার পর আমাদের মাঝে সততার প্রতিযোগিতাও ছিল। সততার প্রতিযোগিতা না থাকলে আপনারা কিন্তু বড়দের মত বড় আইনজীবী হতে পারবেন না।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আরও বলেন, ব্যাচেলর, পুলিশ ও আইনজীবীদের কেউ বাড়ি ভাড়া দিতে চান না। উকিল বাড়িতে উঠলে নামতে চান না, ওকালতির প্যাঁচ দেখান। এজন্য উকিলদের অনেকে সম্মান দিতে চান না। অথচ তারা চাইলেই ভালো ভাড়া পরিশোধ করতে পারেন। এরকম মুষ্টিমেয় আইনজীবীর জন্য যেন পেশার মর্যাদা না হারায়।

আইন বিভাগের শিক্ষিকা কুররাতুল আইন দীপার সঞ্চালনা এবং আইন বিভাগের ডিন ব্যারিস্টার সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী নজিবিল্লাহ হিরু, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ফাতেনাজ ফিরোজ, ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মাদ আলী নকি প্রমুখ।

আরও পড়ুন: ‘আপনার বুদ্ধি-পরামর্শে কারো যেন ক্ষতি না হয়’, আইনজীবীদের উদ্দেশে অ্যাটর্নি জেনারেল

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে আইনজীবীদের বিশেষ গাউন ও ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন