অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল বাতেন
অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল বাতেন

বার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন আইনজীবীবান্ধব নেতৃত্ব তৈরীর অন্তরায়

মো. আব্দুল বাতেন: বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সহ সারাদেশের প্রতিটি জেলার আইনজীবী সমিতিতে প্রতি বছর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়। যারা আইনজীবীদের প্রতিনিধি হিসাবে সমিতি পরিচালনা করে থাকেন।

দেশের আইনজীবী সমিতিগুলো দল নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হলেও এর পরিচালনা পর্ষদের মনোনয়ন দলীয়ভাবে দেওয়া হয়। দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়া ও এক্ষেত্রে স্থানীয় নেতাদের মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব থাকায়, কোর্ট প্র্যাকটিসে অধিক যোগ্যতা সম্পন্ন এবং নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন ভালো মানের আইনজীবীরা এই ধরণের নির্বাচনে আসতে আগ্রহী হননা আবার কেউ কেউ চাইলেও আসতে পারছেন না। দলীয় মনোনয়নের কারণে মাঝেমধ্যে পরিলক্ষিত হয়েছে, সাধারণ আইনজীবীদের সাথে তুলনামূলক কম সুসম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ মনোনয়ন পাচ্ছেন। বিকল্প না থাকায় এদের মধ্য থেকেই কাউকে না কাউকে নির্বাচিত করা হয়।

দলীয় মনোনয়নে নির্বাচিত ব্যক্তি নির্দলীয় প্রতিষ্ঠানে এসে আইনজীবীদের অধিকার আদায়ে ভূমিকা কম থাকলেও দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে পড়ার অভিযোগ আদালত অঙ্গনে কম নয়। যার ফলে সাধারণ আইনজীবীরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। আইনজীবীদের দলীয় পৃথক পরিচয় থাকায় সামাজিকভাবেও সকল আইনজীগণ সমান মূল্যায়ন পায় না।

আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বন্ধ হলে এবং ভালো মান ও মনের আইনজীবীরা নির্বাচিত হয়ে আসলে, সকল আইনজীবীদের মাঝে একাত্মতা তৈরী হবে। যার ফলে আইনজীবী সুরক্ষা আইন দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমে আইনজীবীদের সম্মানজনক অবস্থান সুদৃঢ় হবে। জেল কোডে আইনজীবীদের জন্য পৃথক ডিভিশন থাকবে। বেঞ্চও সকল আইনজীবীদের সমানভাবে মূল্যায়ন করবে।

লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।

এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম -এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।