কুমিল্লায় ভুল চিকিৎসা দিয়ে অপারেশন থিয়েটারে রোগী রেখে ডাক্তারের পলায়ন, আদালতে মামলা
আদালত (প্রতীকী ছবি)

দুর্নীতির দায়ে সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তার কারাদণ্ড, সম্পদ বাজেয়াপ্ত

যশোরে দুর্নীতি মামলায় সাবেক এক কাস্টমস কর্মকর্তার আট বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে রায়ে ওই আসামির দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪২ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

যশোরের স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক রোববার (২৯ মে) এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম কেএম সিদ্দিকুর রহমান। তিনি যশোর শহরের ঘোপ সেন্টাল রোডের কবি গোলাম মোস্তাফা বাইলেনের বাসিন্দা। সিদ্দিকুর রহমান কাস্টমস এক্সাইজ ভ্যাট যশোরের পরিদর্শক ছিলেন। বর্তমানে তিনি জেলহাজতে আটক রয়েছেন।

যশোর দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুর্নীতি দমন আইনের ৪(২) ধারার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুদক আইনের ৫(১) ধারার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে আরো ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। উভয় সাজা একই সঙ্গে চলবে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, কাস্টমস এক্সাইজ ভ্যাট যশোরের পরিদর্শক কেএম সিদ্দিকুর রহমান ১৯৯৮ সালের ৭ জুন দুদকের নোটিশ অনুযায়ী তার অর্জিত সম্পদের বিবরণ জমা দেন। এ বিবরণীতে তিনি শহরের ঘোপ সেন্টাল রোডে ৯ দশমিক ৯৫ শতক জমির উপর একটি দ্বিতল বাড়ি আছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। যা তিনিসহ স্ত্রী মিলে ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এ বাড়িটি নির্মাণ করেছেন বলে উল্লেখ করেন।

এ সম্পদ বিবরণীর প্রাথমিক তদন্তে বাড়িটি নির্মাণ করতে ৩৪ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫৬ টাকা ব্যয় হয়েছে জানা যায়। তিনি আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করতে বাড়ির দাম নির্ধারণ করেছিলেন ১৩ লাখ টাকা। এ বাড়ির জমি থেকে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে ১ দশমিক ১৯ শতক দান করেছেন বলেও মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন হিসাব বিবরণীতে।

এপ্রেক্ষিতে ২০০২ সালের ৩১ অক্টোবর তৎকালীন দুদক কর্মকর্তা আব্দুর রব নকিব আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কেএম সিদ্দিুকর রহমানের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তে ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪২ টাকার সম্পদ আয় বহির্ভূত বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।

সিদ্দিুকুর রহমান সম্পদের হিসাব বিবরণীতে ওই সম্পদ গোপন করেছেন। তদন্ত শেষে আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় সিদ্দিকুর রহমানকে অভিযুক্ত করে ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ আহমেদ।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামি সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে উপরোক্ত সাজা প্রদান করেন। এছাড়া রায়ে আয় বহির্ভূত অর্জিত সম্পদ ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪২ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।