সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি এবং ওই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণীর ছাত্র আশরাফুল আহসান জিতুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
আজ বুধবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক হিসেবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার একটি ভাড়া বাসা থেকে জিতুর বাবা উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
বুধবার আসামি উজ্জ্বলকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক এমদাদুল হক।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আটকের পর উজ্জল হোসেন কি মামলার আসামি, এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ জানায়, ‘আমাদের কাছে মনে হচ্ছে তার (উজ্জল) প্রশ্রয়েই ওই শিক্ষার্থী শিক্ষককে আঘাত করেছিল। এছাড়া তিনি তার ছেলেকে পালাতে সাহায্য করছেন। তাকে মামলায় আসামি করা হবে।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করার পর আশুলিয়ায় চিত্রশাইলে হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন উৎপল কুমার সরকার।
গত শনিবার দুপুরে দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ওই ছাত্র ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের ওপর। প্রথমে ওই ছাত্র শিক্ষকের মাথায় আঘাত করে এবং পরে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এ ছাড়া স্ট্যাম্পের সুচালো অংশ দিয়ে পেটের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় উৎপলকে প্রথমে আশুলিয়া নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃত্যুর সঙ্গে দুইদিন পাঞ্জা লড়ে সোমবার ভোরে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় গত রোববার আশুলিয়া থানায় উৎপলের ভাই অসীম কুমার সরকার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় জিতুকে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়াও কয়েকজনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়।