ইয়াবা পাচারের মামলায় কক্সবাজারে ৮ রোহিঙ্গার যাবজ্জীবন
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৫, কক্সবাজার

ইয়াবা পাচারের মামলায় কক্সবাজারে ৮ রোহিঙ্গার যাবজ্জীবন

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : দুই লক্ষ ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় ৮ জন রোহিঙ্গাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। একইসাথে প্রত্যককে এক লক্ষ টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৫ নিশাত সুলতানা সোমবার (৩০ জানুয়ারি) এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দন্ডিত আসামিরা হলেন- মৃত সিকদার আলী’র পুত্র মোঃ দইলা (২০), মীর আহমদের পুত্র মোঃ রবি আলম (২৫), মোঃ হাফেজের পুত্র মোঃ আলম (২৫), করিমের পুত্র মোঃ শফিকুল (২৮), মৃত মনু’র পুত্র মোঃ নুর (১৯), মৃত নুরুল হাকিমের পুত্র নুরে আলম (৩০), মৃত লাল মিয়ার পুত্র আলী আহমদ (২০) এবং আবু সুফিয়ানের পুত্র নুরুল আমিন (২০)। তারা সকলেই মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার বাসিন্দা।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে এডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট আহমদ কবির এবং আসামীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম ও অ্যাডভোকেট তাজমিন হুদা চৌধুরী মামলাটি পরিচালনা করেন।

কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির বেদারুল আলম ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম’কে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ

২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে কোস্ট গার্ডের টেকনাফ কেরুনতলী স্টেশনের একটি টিম টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণে ছেরাদ্বীপের কাছে এক অভিযান চালিয়ে ৮ জন মিয়ানমারের নাগরিক সহ একটি যন্ত্রচালিত বোট আটক করে। পরে আটককৃতদের হেফাজত হতে ২ লক্ষ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রোহিঙ্গা মোঃ দইলা, মোঃ রবি আলম, মোঃ আলম, মোঃ শফিকুল, মোঃ নুর, নুরে আলম, আলী আহমদ এবং নুরুল আমিন-কে আসামী করে কোস্ট গার্ডের টেকনাফ কেরুনতলী স্টেশনের পেটি অফিসার মোঃ জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৪৯/২০১৯ ইংরেজি। জিআর মামলা নম্বর : ৮০৫/২০১৯ ইংরেজি (টেকনাফ) এবং এসটি মামলা নম্বর : ৪৫৭/২০২১ ইংরেজি।

বিচার ও রায়

মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে ২০২১ সালের ২১ জুন চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। পরে মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৫ এর আদালতে পাঠানো হয়।

এ আদালতে মামলার ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট যাচাই, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য সোমবার দিন ধার্য করা হয়।

রায় ঘোষণার দিনে বিচারক কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৫ নিশাত সুলতানা ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) সারণীর ১০ (গ) ধারায় আসামীদের দোষী সাব্যস্থ করে উপরোক্ত রায় ঘোষণা করেন।