রমজানে অধস্তন আদালতের সময়সূচি নির্ধারণ
আদালত (প্রতীকী ছবি)

৫৫০ সন্তানের বাবা হওয়া ব্যক্তিকে থামতে বললো আদালত

শুক্রাণু দানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ৫৫০টিরও বেশি সন্তানের পিতা হওয়ার সন্দেহে নেদারল্যান্ডসের এক ব্যক্তিকে এবার থামার নির্দেশ দিয়েছেন একটি ডাচ আদালত। আদেশ অনুযায়ী ওই ব্যক্তি আর কোনো হাসপাতালে শুক্রাণু দান করতে পারবেন না।

সম্প্রতি ওই ব্যক্তির এক সন্তানের মা তাঁর এই শুক্রাণু দান বন্ধ করার উদ্যোগ নেন। ওই ব্যক্তিকে যেন আর শুক্রাণু দানের অনুমতি দেওয়া না হয় এই আরজি জানিয়ে দেশটির একটি আদালতে আবেদন করেন ওই নারী। গতকাল শুক্রবার আদালত অজাচার রোধে তাঁর শুক্রাণু দানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, জোনাথন নামের ৪১ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি আর কোনো হাসপাতালে শুক্রাণু দান করতে পারবেন না। প্রতিবার এই নির্দেশ অমান্য করলে তাঁকে ১ লাখ ১০ হাজার ডলার জরিমানা দিতে হবে।

বিশ্বের যেসব হাসপাতালে শুক্রাণু সংরক্ষিত আছে, সেসব হাসপাতালে ওই সব শুক্রাণু ধ্বংস করে ফেলার জন্য জোনাথনকে চিঠি লিখে জানানোরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তবে ইতিমধ্যে তাঁর শুক্রাণু থেকে যাঁরা মা–বাবা হয়েছেন শুধু তাঁরা চাইলে সংরক্ষিত শুক্রাণু নিতে পারবেন।

এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে নেদারল্যান্ডসের ফাটিলিটি ক্লিনিকগুলোতে শুক্রানু দান করা থেকে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, যখন এটি প্রকাশিত হয়েছিল যে তিনি ১০০টিরও বেশি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু থামার পরিবর্তে তিনি বিদেশে এবং অনলাইনে শুক্রাণু দান করতে থাকেন।

জোনাথন নামের ৪১ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি আবারও শুক্রাণু দান করার চেষ্টা করলে তাকে এক লাখ পাউন্ডেরও বেশি জরিমানা করা হতে পারে। তিনি শত শত নারীকে বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে এই কাজ করেছেন বলে জানা গেছে।

হেগের একটি আদালত তাকে বলেছে, তার ব্যবহৃত সমস্ত ক্লিনিকের তালিকা দিতে এবং তাদেরকে তার শুক্রাণু ধ্বংস করার নির্দেশ দিতে।

ডাচ ক্লিনিক্যাল নির্দেশিকা বলে, একজন দাতাকে ১২টি পরিবারে ২৫টির বেশি সন্তানের পিতা করা উচিত নয়।

তবে বিচারকরা বলেছেন, লোকটি ২০০৭ সালে শুক্রাণু দান শুরু করার পর থেকে ৫৫০ থেকে ৬০০র মতো সন্তান উৎপাদনে সহায়তা করেছেন।

বীর্যদানের মাধ্যমে জন্ম নেয়া শিশুদের অধিকার রক্ষাকারী একটি ফাউন্ডেশন এবং তার শুক্রাণু থেকে জন্ম নেওয়া এক শিশুর মা ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে।

আদালতের মুখপাত্র গের্ট-মার্ক স্মেল্ট বলেছেন, ‘বিষয়টি হলো, শত শত সৎ ভাই-বোনের সাথে এই আত্মীয়তার নেটওয়ার্ক অনেক বেশি বড়’।

বিভিন্ন ডাচ ক্লিনিকে ও ব্যক্তিগতভাবে ওই ব্যক্তির ১০০টিরও বেশি সন্তানের জন্ম হয়েছে। তবে তিনি একটি ডেনিশ ক্লিনিকেও দান করেছিলেন, যা তার বীর্য বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ঠিকানায় প্রেরণ করেছিল।

বিচারক থেরা হেসেলিংক বলেছেন, আদালত ‘এই রায় জারির পর নতুন সম্ভাব্য পিতামাতাকে তার বীর্য দান করতে আসামিকে নিষেধ করেছে’।

বিচারক বলেছেন, সম্ভাব্য পিতামাতার কাছে তার পরিষেবার বিজ্ঞাপন দিতে বা তাদের সাথে যোগাযোগ করার অনুমতি তার নেই।

শুক্রাণু দাতাদের বলা হয় তাদের পরিষেবা সীমিত করতে, যাতে সৎ ভাইবোনরা নিজেদের অজান্তে একসাথে সন্তান ধারণ করতে না পারেন।

নেদারল্যান্ডসে এর আগেও এ নিয়ে কেলেঙ্কারি হয়েছে। ২০১৯ সালে একজন ডাচ ফাটিলিটি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগীদের সম্মতি ছাড়াই গর্ভধারণের জন্য তার নিজের শুক্রাণু ব্যবহার করার অভিযোগ ওঠে। এভাবে তিনি ৪৯ সন্তানের পিতা হয়েছিলেন বলে নিশ্চিত করা হয়।