শেভরনের তিন কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সমন জারি
বহুজাতিক গ্যাস উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান শেভরন

শেভরনের তিন কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সমন জারি

আদালতের আদেশ অমান্য করে শ্রমিক নিয়োগ

আদালতের আদেশ অমান্য করে নতুন করে শ্রমিক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে বহুজাতিক গ্যাস উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান শেভরন বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছে।

শেভরন থেকে সদ্য চাকরীচ্যুত শ্রমিক (ড্রাইভার) মো. মজিবুর রহমানের দায়ের করা অভিযোগ আমলে নিয়ে আজ রোববার (২৮ মে) ঢাকার প্রথম শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান (বিচারক) মো. শওকত আলী এ আদেশ দেন।

মামলার আসামিরা হলেন- শেভরন বাংলাদেশ ব্লকস থার্টিন এন্ড ফরটিন লি. এর ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর গ্রেস কনডন, সাপ্লাই চেইন বিভাগের ম্যানেজার এস এম শাহরিয়ার আবেদীন, শেভরনের কন্ট্রাক্ট (চুক্তি সংক্রান্ত) ম্যানেজার সাব্বির শামস, শেভরনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রপার্টি কেয়ার বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড (পিসিএস) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিদার এ হোসেন এবং একই প্রতিষ্ঠানের মানব সম্পদ বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার বাসুদেব বেপারী ও সিলেট অঞ্চলের ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল ইসলাম।

জানা গেছে, ড্রাইভারসহ অন্যান্য পদে নতুন নিয়োগ কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে কারণ দর্শানোর জন্য শেভরন এবং পিসিএস কর্তৃপক্ষের প্রতি নোটিশ জারি করেন আদালত। গত ১৬ মে জারি করা শোকজ নোটিশের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ৬টি দরখাস্তের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ড্রাইভার ও কুকসহ বিভিন্ন পদে নতুন কোন নিয়োগ কার্যক্রমের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিত আদেশ দেন আদালত।

ওইদিন বাদী-শ্রমিকদের পক্ষে দাখিলকৃত দরখাস্তের উপর শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ড. উত্তম কুমার দাস। শুনানিতে শেভরন নিযুক্ত আইনজীবী নাইম আহমেদ ও মামুন চৌধুরী এবং পিসিএস নিযুক্ত আইনজীবী মোহাম্মদ সিরাজ প্রমুখ অংশ নেন। এছাড়া শুনানিকালে কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

তবে ঢাকার প্রথম শ্রম আদালত কর্তৃক ইস্যুকৃত শোকজ (কারণ-দর্শানোর) নোটিশের জবাব না দিয়ে এবং সংশ্লিষ্ট অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ২৩ মে ড্রাইভার পদে ২৭ জন এবং কুক পদে ৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগ প্রাপ্তরা গত ২৫ মে বিকালে বিবিয়ানা ও সিলেট গ্যাসফিল্ডে কাজে যোগদান করেছে।

শেভরন বাংলাদেশ -এর অধীনে ১২ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত কর্মরত প্রায় চার শতাধিক শ্রমিক কর্মচারী উক্ত চাকরিতে নিয়মিত ও স্থায়ী হওয়ায় পৃথক পৃথকভাবে ঢাকার শ্রম আদালতে মামলা করেন।

মামলা চলাকালে মামলার বাদী ১২৭ জন শ্রমিককে বেআইনিভাবে টার্মিনেট করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিসিএস কে দিয়ে শেভরন কর্তৃপক্ষ এই অব্যাহতি আদেশ জারি করান।

পরবর্তীতে এই অব্যাহতি আদেশকে অবৈধ ঘোষণা এবং নিজ নিজ পদের পুনর্বহালের আদেশ প্রার্থনা করে ৯৫ জন শ্রমিক শ্রম আদালতে পৃথক পৃথকভাবে দরখাস্ত দাখিল করেন।

আদালত এসব আবেদন গ্রহণ করে শেভরন ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিসিএস কর্তৃপক্ষকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর আদেশ দেন। সেই সাথে আগামী ১৩ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।