চ্যাটজিপিটি দিয়ে বানানো নথি আদালতে জমা, শাস্তির মুখে আইনজীবী

মামলার বিবরণ লিখতে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার, দুই আইনজীবীর ৫ হাজার ডলার জরিমানা

কাজ সহজ করার জন্য চ্যাটজিপিটি দিয়ে মামলার বিবরণ লিখিয়েছিলেন নিউ ইয়র্কের দুই উকিল। কল্পনাও করতে পারেননি সেই ‘শর্টকাট পথ’ তাদের নিয়ে ফেলবে কয়েক হাজার ডলার জরিমানায়, খারিজ হয়ে যাবে মামলাও।

কল্পিত উদ্ধৃতি ব্যবহার করার অভিযোগে নিউ ইয়র্কের দুই আইনজীবীকে অর্থদণ্ড দিয়েছেন এক মার্কিন বিচারক।

আইনজীবী স্টেভেন শোয়ার্টজ, পিটার লো’ডুকা এবং তাদের আইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লিভিডো, লিভিডো অ্যান্ড উবারম্যানকে ম্যানহাটনের ডিসট্রিক্ট জাজ পি কেভিন ক্যাস্টেল পাঁচ হাজার ডলার জরিমানা করেছেন বলে উঠে এসেছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

আইনজীবী দুইজন “আদালতের সঙ্গে প্রতারণা” করেছেন এবং “সজ্ঞানে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে বিভ্রান্ত করেছেন” –বলেছেন বিচারক ক্যাস্টেল।

এক বিবৃতিতে লিভিডো, লিভিডো অ্যান্ড উবারম্যান বলেছেন, তারা “যথাযথ সম্মানপূর্বক” আদালতের সঙ্গে এই বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করছেন যে, তাদের প্রতারণার কোনো উদ্দেশ্য ছিলো না।

“আমরা সরল বিশ্বাসে ভুল করেছি এবং বুঝতে পারিনি যে, একটি প্রযুক্তির ব্যবহার পুরো মামলাটিকে ভিত্তিহীন করে দেবে।” –বলা হয়েছে বিবৃতিটিতে।

শোয়ার্টজের পক্ষের আইনজীবী এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি, সাড়া পাওয়া যায়নি লোডুগার পক্ষ থেকেও। তবে তার পক্ষের আইনজীবী বলছেন তারা আদালতের আদেশটিকে পর্যবেক্ষণ করে দেখছেন।

মে মাসে শোয়ার্টজ স্বীকার করেন, কলম্বিয়ার এভিয়ানকা এয়ারলাইনের বিরুদ্ধে করা একজন মক্কেলের আহত হওয়ার মামলা নিয়ে গবেষণায় চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেন। ওই বর্ণনায় এমন কিছু মামলার সূত্র চলে আসে যা আদতে চ্যাটজিপিটির সৃষ্ট। মার্চেই অ্যাভিয়ানকার আইনজীবীরা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন যে, তারা বিবরণে থাকা বেশ কিছু মামলার অস্তিত্ব খুঁজে পাচ্ছেন না।

অ্যাভিয়ানকার পক্ষের একজন আইনজীবী বার্ট বানিনো বলেন, চ্যাটজিপিটির ব্যবহারের প্রসঙ্গ বাদ দিয়েও বলা যায়, আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়ে যথাযথ রায় দিয়েছেন।

রায়ে আদালত বলেন, “এআই থেকে সহায়তা নেওয়ায় কোনো আইনজীবীর ওপর বিধিনিষেধ নেই। তবে, আইনজীবী হিসাবে তার ওপর দায় বর্তায় যে, তিনি তার বক্তব্য নির্ভুলভাবে উপস্থাপন করবেন।”

রায়ে আরও বলা হয়, আদালত এবং বিবাদীপক্ষের সূত্রের অস্তিত্ব নেই বলার পরও বাদীপক্ষ মিথ্য দাবির উপর অনড় থেকেছে।

পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, তাদের আদালতের কাছে সব সত্য প্রকাশ করা উচিৎ ছিলো।