কক্সবাজারের ডিসিকে হাইকোর্টে তলব
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: জয়দীপ্তা দেব চৌধুরী

উচ্চ আদালতকে অমান্য করে কেউ ভালো থাকতে পারে না: হাইকোর্ট

উচ্চ আদালতকে অমান্য ও উপেক্ষা করে কোনো মানুষ ভালো থাকতে পারে না। কোনো দেশের মানুষ উচ্চ আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে টিকে থাকতে পারে না। এটি ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নয়, বিষয়টি চেয়ারের। এই সুপ্রিম কোর্ট টিকে না থাকলে ১৮ কোটি মানুষের জন্য খুবই বিপদ হবে।

এ মামলার শুনানিতে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (৬ আগস্ট) এমন মন্তব্য করেন।

ছিনতাইয়ের অভিযোগে করা এক মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া দুই আসামিকে আটক, নির্যাতন ও তাঁদের কাছ থেকে টাকা (ব্যাংকের চেক) নেওয়ার অভিযোগ বিষয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তা এবং জামিন সত্ত্বেও আসামিদের কারাগারে পাঠানোর বিষয়ে শরীয়তপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যাখ্যাবিষয়ক শুনানিতে আদালত ওই মন্তব্য করেন।

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। দুই পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ্‌ মনজুরুল হক, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী পলাশ চন্দ্র রায়।

শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী মুজিবুর রহমান বলেন, গত ২৯ মে হাইকোর্ট আসামিদের জামিন দেন। আর ৩০ মে তাঁদের কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জামিন মঞ্জুরসংক্রান্ত আইনজীবীর সনদ দেওয়া সত্ত্বে তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে (১ জুন) হাজির করেন। সেদিন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান আসামিদের জেলহাজতে পাঠান। আসামিরা বলেছেন, হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন। এ ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দেখা দরকার ছিল।

শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বলেন, আসামিদের কারাগারে পাঠানো বা জামিন না দেওয়ার বিষয়টি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আওতাধীন ছিল না। চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তথ্য জানার পর ৪ জুন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে কারণ ব্যাখ্যা করতে বলেন। জবাবে ম্যাজিস্ট্রেট বলেছেন, ১ জুন আসামিদের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির করা হয়, তখন আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিল না। জামিনসংক্রান্ত সনদের বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হয়নি।

শুনানিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তার আইনজীবী শাহ্‌ মনজুরুল হক বলেন, রাসেল মনির ও শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে আইনজীবী সনদ দেখায়নি আসামিপক্ষ।

পরে আদালত শরীয়তপুরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরানকে ২০ আগস্ট হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে আসামিপক্ষের আইনজীবীর এক আবেদনের শুনানি নিয়ে ১৩ জুন হাইকোর্ট অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে শরীয়তপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, শরীয়তপুরের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) রাসেল মনির ও পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে ১৬ জুলাই আদালতে হজির হতে নির্দেশ দেন।

ধার্য তারিখে তাঁরা আদালতে হাজির হন। সেদিন আদালত শরীয়তপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। একই সঙ্গে ৬ আগস্ট শুনানির জন্য দিন রাখেন। এ অনুসারে রোববার শুনানি হয়। এসময় দুই পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।