ঘূর্ণিঝড় 'হামুন' এ কক্সবাজার আদালত পাড়ার ব্যাপক ক্ষতি

ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ এ কক্সবাজার আদালত পাড়ার ব্যাপক ক্ষতি

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : গত ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে কক্সবাজার উপকূলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় “হামুন” লন্ডভন্ড করে দিয়েছে কক্সবাজার আদালত পাড়া।

গত ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত ৭ টা থেকে রাত সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত ১৪০ কি: মি: গতি বয়ে যাওয়া প্রায় দেড়ঘন্টার ঘূর্ণিঝড় হামুন এর আঘাতে কক্সবাজার জেলা জজ আদালত ভবন এলাকায় ৩৮ টি বিভিন্ন জাতের বড় গাছ উপড়ে যায়। ভেঙে যায় ভবনের জানালার কাঁচ, দরজা, জানালা ও বেলকনি।

কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস. এম. আব্বাস উদ্দিন জানান, ঘূর্ণিঝড়ের পর পুরো ২ দিন জেলা জজ আদালত ভবনে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।

একই আদালতের জেলা নাজির বেদারুল আলম জানান, ২ দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় আদালত ভবন এলাকায় ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করেছিল। তার মতে, জেলা জজ আদালত ভবন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং কক্সবাজার ঘূর্ণিঝড় প্রবণ এলাকা হওয়ায় আপদকালীন সময়ে ব্যবহারের জন্য উচ্চ ভোল্টেজ সম্পন্ন জেনারেটর অথবা বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা থাকা দরকার।

কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশেক ইলাহী শাহজাহান নুরী জানান, কক্সবাজার সিজেএম ভবনটি ১৯৫২ সালে নির্মিত ৭১ বছরের পুরাতন ও ব্যবহার অযোগ্য ঘোষিত একটি জরাজীর্ণ ভবন। এরমধ্যে ঘূর্ণিঝড় হামুন এ বড় বড় গাছ জরাজীর্ণ ভবনের উপর ভেঙে পড়ায় সিজেএম ভবনটি আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

ভবনে ২ দিন বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ ছিলো। হামুন এ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হওয়ার পাশাপাশি ভবনটিতে অসংখ্য জায়গায় রড় বড় ফাটল ধরেছে। ভবনটি ভেঙে পড়ার আশংকায় এখানে সবসময় ভীত-সন্ত্রস্ত থেকে কাজ করতে হয়। ফলে স্বাভাবিক কাজ কর্ম ব্যাহত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তারেক বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুন এর তান্ডবে কক্সবাজার আইনজীবী সমিতির ৩ টি ভবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। গাছ পালা উপড়ে গেছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। দরজা, জানালা, কাঁচ ভেঙে ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তারেক জানিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, হামুন এর আঘাতে সমিতির তিনটি ভবনে অসংখ্য আইনজীবীদের চেম্বার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ক্ষতি কাটিয়ে তুলতে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার ২৪ অক্টোবর কক্সবাজার উপকূলের উপর দিয়ে প্রচন্ড গতিতে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় হামুন এর তান্ডবে কক্সবাজারে ৩ জন নিহত ও সহস্রাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ পরিবারের ১০ লক্ষ উপকূলবাসী।