বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানির জন্য আগামী রোববার (৮ জানুয়ারি) দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
জামিন আদেশের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করে আজ বুধবার (৪ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম এ আদেশ দেন।
রোববার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে। ওইদিন পর্যন্ত তাদের জামিননামা বিচারিক আদালতে দাখিল করতে পারবেন না আইনজীবীরা। ফলে ওই সময় পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস কারামুক্ত হতে পারবেন না।
আদালতে বিএনপি নেতাদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন সহ শতাধিক আইনজীবী।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ, মেহেদী হাছান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। তিনি জানান, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সরকারের দায়রকৃত আবেদন আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য রোববারের (৮ জানুয়ারি) কার্যতালিকায় শীর্ষে নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগের মাননীয় চেম্বার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। উল্লেখিত সময়ের মধ্যে জামিননামা দাখিল না করতেও আসামীপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) তাদের ৬ মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কেন স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। এরপর তাদের জামিন ঠেকাতে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। বুধবার সকালে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এর আগে মোট চারবার ফখরুল ও আব্বাসের জামিন আবেদন নাকচ করেন অধস্তন আদালতের বিচারকরা। পরে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তারা।
উল্লেখ্য, গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত হন এবং পুলিশসহ অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। সংঘর্ষের পর পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান চালায়।
ঘটনার পরদিন পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পৃথক চারটি মামলা করে পুলিশ। এতে ২ হাজার ৯৭৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৭২৫ জনের। তবে সেখানে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না।
পরবর্তীতে ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে নিজ নিজ বাসা থেকে ফখরুল ও আব্বাসকে তুলে আনে ডিবি পুলিশ। (ডিবি)। দুজনকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে। পরদিন তাদের পল্টন থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে কারাগারেই আছেন এই দুই বিএনপি নেতা।