অ্যাডভোকেট হালিম উর রশিদ নান্নু: গাজীপুরের জনসংখ্যা ও মামলা-মোকদ্দমার তুলনায় আদালত, বিচারক ও এজলাস স্বল্পতা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী গাজীপুর জেলা। রাজধানীর পার্শ্ববর্তী হওয়ায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে প্রায় সবক্ষেত্রেই।
তবে বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত পরিবর্তনে তেমন কোনো ছোঁয়া লাগেনি। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জন্য নির্মিত তিনতলা একটি পুরোনো ভবনে চলছে আদালতের বিচারকাজ। ইতিপূর্বে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের জন্যে জমি অধিগ্রহণের পরেও গাজীপুর জেলায় নতুন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি এখনো।
বাংলাদেশের প্রায়ই সবগুলো জেলাতে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ করার পরেও গাজীপুর জেলায় কোন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ করা হয়নি। যেই পরিমাণ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রয়েছে ঐ পরিমাণ এজলাস নেই গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবন প্রাঙ্গণে।
বর্তমানে এজলাসের স্বল্পতার কারণে গাজীপুরে একই এজলাসে দিনে দুই বা তিনজন বিচারক ধারাবাহিকভাবে কাজ করেন। একই খাস কামরায় দু-তিনজন বিচারক বসেন। পাশাপাশি এজলাস স্বল্পতার কারণে একজন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে দুইটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকি কার্যক্রম। নিজস্ব ভবন না থাকায় আদালতের কর্মচারীও গাদাগাদি করে বসে কাজ করছেন।
ম্যাজিস্ট্রেট আদালতগুলো ভাওয়াল রাজবাড়ির ছোট ছোট তিনটি কক্ষকে এবং রাজবাড়ির ভিতরে খালি জায়গায় অস্থায়ী টিনশেডের ছোট ছোট কক্ষ তৈরি করে, ঐ কক্ষগুলোতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাস তৈরি করে আদালতের বিচারিক কার্যক্রম কষ্টকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে পরিচালনা করে আসছেন।
ভাওয়াল রাজবাড়ির ভিতরে তৈরি করা ঐ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাসগুলো অতিরিক্ত ছোট হওয়ার কারণে এজলাস গুলোতে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটগণের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয় খুব কষ্টকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে। এজলাসগুলো এত ছোট যে একসাথে ৫-৬ জন বিজ্ঞ আইনজীবী বসার জায়গা নেই এবং দাড়িয়ে থাকার জায়গা পর্যন্ত নেই। গরমের দিনে এই কষ্টকর পরিস্থিতি চরম আঁকার ধারণ করে।
গাজীপুরে বিজ্ঞ শ্রম আদালতের বিচারকি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মূল ভবন হতে দূরবর্তী স্থানে আবাসিক ভবন ভাড়া নিয়ে এবং ম্যাজিস্ট্রেট আদালতগুলো বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মূল ভবন হতে দূরে হওয়ার কারণে বিভিন্ন রকম নিরাপত্তার প্রশ্ন থেকেই যায়। ইতিপূর্বে রাতের বেলায় চুরি হয়েছে কয়েকবার।
পাশাপাশি জি আর ও, নন-জি আর ও, ডেসপাস, মালখানা, গারদখানা, আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা প্রদানের জন্যে নিয়োজিত পুলিশ ভাইদের থাকা, খাওয়ার জায়গা এই সবই ভাওয়াল রাজবাড়ির ঐ সব ছোট ছোট কক্ষগুলোতে পরিচালিত হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে।
বিচারিক কাজে নিয়োজিত বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটদের উপর অতিরিক্ত বিচারিক দায়িত্ব অর্পণ করে চলছে গাজীপুরের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারিক কার্যক্রম। কিছু কাজ আছে, যা ম্যাজিস্ট্রেটগণ কে প্রতিদিন জরুরী ভিত্তিতে করতেই হয়। যেমন- জামিন শুনানি, রিমান্ড শুনানি, নতুন মামলার ফাইলিং গ্রহণ, আসামীর দোষ স্বীকারোক্তি রেকর্ড, ভিকটিমের জবানবন্দি রেকর্ড, সমন বা ওয়ারেন্ট পেয়ে হাজির হওয়া সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা রেকর্ড, জুডিসিয়াল তদন্তের সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ, রায় লিখা ইত্যাদি।
গাজীপুর জেলার আদালতে প্রায়ই একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে দিনে ২৫/৩০টির মত জামিন শুনানি ও আদেশ লিখন, ৩/৪টি রিমান্ড শুনানি ও আদেশ লিখন, ২০/২৫টি নতুন মামলার ফাইলিং গ্রহণ ও আদেশ লিখন, একাধিক আসামীর দোষ স্বীকারোক্তি রেকর্ড, একাধিক ভিকটিমের জবানবন্দি রেকর্ড, ১০/১২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা রেকর্ড, জুডিসিয়াল তদন্তের ৪/৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও একাধিক তদন্ত রিপোর্ট লিখন, একাধিক পূর্ণাঙ্গ রায় লিখন ইত্যাদি কাজ করতেই হয়। এর উপর ম্যাজিস্ট্রেসির অতিরিক্ত বিচারিক দায়িত্ব।
গাজীপুর জেলার দেওয়ানী আদালতগুলোতে বিচারাধীন রয়েছে হাজার-হাজার দেওয়ানী মোকদ্দমা। পূর্ব-পুরুষের সম্পত্তি নিয়ে পরবর্তী কয়েক পুরুষের মধ্যে মোকদ্দমা চলছে। বিচারাধীন রয়েছে বাবা-দাদার আমলে দায়ের করা মোকদ্দমাও। এই মোকদ্দমার নথিগুলো স্টাডি করলে দেখা যায়, মোকদ্দমায় ১০-১৫বছর আগে একবার রায়ও হয়েছিলো। সেখান থেকে পুনরায় বিচারে এসেছে। এইসব মোকদ্দমার রায়ের ফল হয়তো বাদী/বিবাদীদের বর্তমান প্রজন্মও ভোগ করতে পারবে কিনা সন্দেহ থেকেই যায়। যদি আবারও রায়ে সংক্ষুদ্ধ কোন পক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল, রিভিশন করে। গাজীপুরে দেওয়ানী আদালতে বিচারাধীন পুরনো মোকদ্দমার সাথে প্রতিবছর যোগ হচ্ছে বিচারপ্রার্থী মানুষের দায়ের করা হাজার-হাজার নতুন মোকদ্দমা। অধিক মোকদ্দমার ভারে নিমজ্জিত প্রত্যেকটি দেওয়ানী আদালত।
গাজীপুর জেলায় দ্রুত মামলা-মোকদ্দমা নিষ্পত্তি করা লক্ষ্যে আরো কমপক্ষে তিনটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল, একটি মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল, একটি শিশু আদালত, আরো দুইটি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত, দুইটি মহানগর যুগ্ম দায়রা জজ আদালত, দুইটি যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত, একটি পরিবেশ আদালত, একটি বিদ্যুৎ আদালত, দুইটি সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, দুইটি সহকারী জজ আদালত, আরো একটি বন আদালত এবং নতুন পাঁচটি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গঠন করা প্রয়োজন।
প্রতিটি কর্মদিবসে আইনজীবী হিসেবে পেশা পরিচালনা করতে গিয়ে দেখি আদালতে শত শত বিচারপ্রার্থী মানুষের সমাগম। আদালতের ভিতরে বিজ্ঞ আইনজীবীদের দাড়ানোর জায়গাটুকুও ফাঁকা নাই। আদালতের বাহিরে বারান্দাতে বিচার প্রার্থীর মানুষের সমাগমের জন্যে এক আদালত হতে আরেক আদালতের যাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে রয়েছে। এই কারণে গাজীপুর জেলার সদ্য বিদায়ী বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ ও নতুন বিজ্ঞ মহানগর দায়রা জজ, অন্যান্য বিজ্ঞ জজ গণ, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেটগণ দের প্রায়ই রাত্র পর্যন্ত বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। এতে করে গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ আইনজীবীদের, বিচারপ্রার্থী জনগণ সহ গাজীপুরের বিচার বিভাগের সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে রাত্র পর্যন্ত কাজ করতে হয়।
বিজ্ঞ বিচারকগণের যত অমানবিক কষ্টের ভিতর দিয়ে বিচারিক কাজ করতে হোক না কেন, তাঁদের প্রতিদিনের জরুরী সব কাজ শেষ করে দিয়ে বাসায় যেতে হয়। বিজ্ঞ বিচারকগণ তাদের আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক কিছুই জনসম্মুখে বলতে পারেন না। নিজেদের এমন অসুবিধা দূর করার জন্য মাননীয় প্রধান বিচারপতি ও মাননীয় আইন উপদেষ্টা কে চিঠি লিখা ছাড়া আর কি করতে পারেন? বিচারকগণ আর কিই বা করবেন, বিজ্ঞ বিচারকগণ তো আর মিছিল করতে পারেন না, ডাক্তারদের চিকিৎস্যা বিরতির মত হরতাল করতে পারেন না।
বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থায় বার ও বেঞ্চ একে অপরের সহায়ক ও পরিপূরক। একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রগতি, স্থিতিশীলতা ও সামাজিক টেকসই উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। এই কাজে গাজীপুর জেলার বিজ্ঞ আদালতের পাশাপাশি গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ সদস্যদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বিজ্ঞ বিচারক ও বিচারপ্রার্থী মানুষের মধ্যে সেতু বন্ধনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন সহ দেশে গণতন্ত্র, নাগরিক অধিকার, আইনের শাসন রক্ষায় বিজ্ঞ আইনজীবীগণ অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করে থাকেন।
১৯৭৮ সনে প্রথম গাজীপুর মহকুমা আইনজীবী সমিতি গঠন করা হয়। ১৯৮৪ সনে ০১মার্চ গাজীপুর মহকুমা থেকে জেলায় উন্নিত হলে বারের নামকরণ করা হয় “গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতি”। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বর্তমানে গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সংখ্যা ২,৪৩৪ জন। সদস্য সংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশের সকল জেলা আইনজীবী সমিতির মধ্যে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে “গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতি”।
বিজ্ঞ আইনজীবীগণ আইন পেশায় নিয়োজিত হয়ে জীবনের সিংহভাগ সময়ই আইন চর্চা তথা মামলা-মোকদ্দমার পেছনেই ব্যয় করে থাকেন। গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতি প্রতিষ্ঠার পর হইতে অদ্য পর্যন্ত বার ও বেঞ্চের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে জেলার বিভিন্ন আদালতের কার্যক্রম পরিচালনায় বিজ্ঞ বিচারকগণের পাশাপাশি গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ আইনজীবীগণ অবদান রেখে আসছেন।
বিজ্ঞ আইনজীবীগণ হলেন বিচার ব্যবস্থার অন্যতম চালিকাশক্তি। বিচারপ্রার্থী মানুষের বিভিন্ন ধরনের মামলাসমূহ দ্রুত, সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতের ক্ষেত্রে অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে বিজ্ঞ আইনজীবীগণ উপযুক্ত ও যথাযথ ভূমিকা রেখে আসছে। গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সংখ্যা ২,৪৩৪ জন হলেও গাজীপুর জেলা আদালত প্রাঙ্গণে জেলা আইনজীবী সমিতির নেই কোন নিজেস্ব জমি। যেখানে বিজ্ঞ আইনজীবীদের পেশা পরিচালনা করার লক্ষ্যে স্থায়ীভাবে গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির ভবন নির্মাণ করে আইনজীবীদের বসার জন্যে পর্যাপ্ত আসন ব্যবস্থা করা সহ আইনজীবীদের অন্যান্য চাহিদা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
নিজস্ব জমি না থাকার কারণে, গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ সদস্যদের পেশা পরিচালনায় যে সকল চাহিদা রয়েছে, তা বাস্তবায়ন করার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন করতে পারছে না গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতি। বর্তমানে ভাওয়াল রাজবাড়ির ভিতরের কিছু ছোট ছোট কক্ষে এবং রাজবাড়ির ভিতরের খালি জায়গায় ছোট ছোট ২টি টিনশেডের ঘর নির্মাণ করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে অস্থায়ীভাবে এই আইনজীবী সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যেটা কিনা গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ আইনজীবীদের চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।
এমতাবস্থায় গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ সদস্যদের পেশার মান সম্মুত রাখিয়া পেশা পরিচালনা করার জন্যে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন আদালত প্রাঙ্গণে নিজস্ব জমি ও ভবন।
গাজীপুর জেলার বিচার বিভাগের এবং গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতি উন্নয়ন হচ্ছে না কেন? ভেবে দেখবেন কি কেউ? অপরদিকে গাজীপুরের বিজ্ঞ বিচারকগণ ও বিজ্ঞ আইনজীবীগণ তাদের দায়িত্ববোধ থেকে বেশি করে যাচ্ছেন বিচার বিভাগের জন্যে।
বাংলাদেশে আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্যে ন্যায় বিচারের পথ অধিকতর সহজ ও ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজন কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা, আন্তরিকতা, সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন। আমাদের গাজীপুর জেলার বিচার বিভাগের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ নয় বরং বাংলাদেশের উন্নয়নের ভাগীদার ও অংশীদার মনে করে গাজীপুর জেলার বিচার বিভাগের এবং গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সামগ্রিক উন্নয়নে যথাযথ কর্তৃপক্ষ সু-দৃষ্টি দিবেন, গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ আইনজীবীরা এই প্রত্যাশা করেন।
লেখক: হালিম উর রশিদ নান্নু; সদস্য, গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতি।