মারধরে আহত আইনজীবী জাসমীন আহমেদ

জামিন পেয়ে আদালতেই আইনজীবী স্ত্রীকে পেটালেন পুলিশ স্বামী

জামিন নিয়ে বের হয়ে আদালতের মধ্যেই আইনজীবী স্ত্রীকে পুলিশ পরিদর্শক স্বামী ও শাশুড়ি এবং দেবর মিলে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দরজার সামনে বুধবার (২৯ মে) এ ঘটনা ঘটে।

মারধরে গুরুতর আহত আইনজীবী জাসমীন আহমেদকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জাসমীনের পেট ও বুকে লাথি মারা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

প্রত্যক্ষদর্শী নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এপিপি আবদুর রউফ জানান, মুসলিম ও পারিবারিক আইনে অতিরিক্ত পিপি জাসমীন আহমেদ তার স্বামী পুলিশ পরিদর্শক আবু নকীব তার মা জুবরিয়া বেগম ও ছোট ভাই আবু নাছের নিপুনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে তারা ৩ জন ৮ সপ্তাহের জামিন পেয়েছেন। এ জামিননামা নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বুধবার দুপুরে দাখিল করতে এসেছিলেন তারা।

তিনি বলেন, দুপুর ১২টায় জামিননামা দাখিল শেষে বের হওয়ার পথে আদালতের দরজার সামনে দেখা হয় মামলার বাদী জাসমীনের সঙ্গে। এসময় তারা তর্কে জড়িয়ে জাসমীনকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন আবু নকীব তার ছোট ভাই নিপুন। তখন আশপাশের আইনজীবীরা এসে জাসমীনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এরপর তাদের ওপর ফুঁসে উঠে আইনজীবীসহ সাধারণ মানুষ। এসময় পরিস্থিতি শান্ত করতে আবু নকীব তার ভাই ও মাকে কোর্ট গারদে নিয়ে আটক রাখেন পুলিশ।

আবু নকীবের বরাত দিয়ে কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান জানান, ঢাকা ট্রাফিকের দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক আবু নকীব অনেক আগেই তার স্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জজ কোর্টের অতিরিক্ত পাবলিক প্রশিকিউটর জাসমীন আহমেদকে তালাক দিয়েছেন। এরপর আবু নকীব ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে জাসমীন আহমেদ একাধিক মামলা করেছেন। বুধবারও একটি মামলায় জামিন নামা দাখিল করতে আসলে জাসমীন তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি শান্ত করতে আবু নকীব ও তার মা এবং ছোট ভাইকে হাজতে রাখা হয়েছিল পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

জাসমীন আহমেদ জানান, আবু নকীব প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রেখে প্রতারণা করে আমাকে বিয়ে করেছে। বিয়ের পর থেকে একাধিকবার আমার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছে যৌতুক হিসেবে। সুখের সংসারের কথা চিন্তা করে তার নানা নির্যাতন সহ্য করেছি। আমি একজন আইনজীবী হয়েও নির্যাতিত। তারপরও স্বামীর সংসারের জন্য অনেক লড়াই করতে হচ্ছে। এখন নির্যাতনের শিকার হলাম আদালতের দরজায়। আমি এর বিচার চাইবো।