গার্ড অব অনার ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাকে দাফন, ক্ষমা চাইলেন ইউএনও
সুপ্রিম কোর্ট

পারিবারিক আদালতের মামলায় ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ দেওয়া যাবে না: হাইকোর্ট

দেশের পারিবারিক আদালতে মামলা চালানোর ক্ষেত্রে মূল ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে অন্যকে ক্ষমতা/প্রতিনিধিত্ব (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) দেওয়া যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত এক রিভিশন খারিজ করে মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আব্দুল হাকিম, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে বাদীপক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সাইদুল আলম খান। বিবাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম খালেদ আহমেদ।

রায়ে আরও বলা হয়েছে, পারিবারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন করার ক্ষেত্রে দেওয়ানি কার্যবিধির ১১৫ ধারা প্রয়োগ বাধা হবে না। যদিও পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশে দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ১০ ও ১১ ছাড়া অন্য ধারার প্রয়োগকে বাতিল করা আছে। এ ক্ষেত্রে ১১৫ ধারা প্রয়োগে বাধা নেই।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের এক আমেরিকা প্রবাসী দম্পতির বিচ্ছেদ হয়। তখন স্ত্রী তার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে প্রায় ১৫/১৬ বছর আগে পারিবারিক আদালতে একটা মামলা করেন। মামলায় সাবেক স্বামীর কাছে দেনমোহর ও দুই সন্তানের ভরণপোষণের দাবি করেন।

ওই মামলায় স্বামী তার পক্ষে মামলা চালাতে এক আত্মীয়কে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেন। কিন্তু সিলেটের পারিবারিক আদালত পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেওয়ার বিয়টি নাকচ করে দেন।

বিবাদী এ বিষয়ে আপিল করলে সিলেটের জেলা জজ আদালত সেই আপিল খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে তিনি হাইকোর্টে রিভিশন করেন। এ রিভিশন আবেদন বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।

শুনানিতে পারিবারিক আদালতের মামলায় দেওয়ানি কার্যবিধির ১০ ও ১১ ধারার বাইরে অন্য কোনো ধারা প্রযোজ্য হবে কিনা, সে বিষয়ে হাইকোর্টের নজরে আসে ভিন্ন ভিন্ন রায়।

এ প্রেক্ষিতে আদেশের জন্য আবেদনটি প্রধান বিচারপতির বরাবরে পাঠানো হয়। প্রধান বিচারপতি রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠন করে দেন।

বিচারপতি এ কে এম আব্দুল হাকিম, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর এই বেঞ্চ রিভিশন আবেদনটি শুনানির এক পর্যায়ে অভিমত নিতে চারজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দিন।

তারা হলেন—জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী, এ এফ হাসান আরিফ, কামাল উল আলম ও প্রবীর নিয়োগী। তারা আদালতে তাদের অভিমত দেন।

এরপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে মঙ্গলবার ওই স্বামীর করা রিভিশন আবেদন খারিজ করে দেন বৃহত্তর বেঞ্চ। ফলে পারিবারিক আদালতে মামলা চালানোর ক্ষেত্রে মূল ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে অন্যকে ক্ষমতা/প্রতিনিধিত্ব (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) দেওয়া যাবে না।

আইনজ্ঞরা বলছেন, হাইকোর্টের এ রায় একটি যুগান্তকারী রায়। এ নির্দেশনা এখন অধস্তন আদালতের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হবে। যদি না এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয় বা আপিলে ভিন্নতর কোনো রায় আসে।