জেয়াদ আল মালুমের দাফন মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবর স্থানে

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট জেয়াদ আল মালুমের সুপ্রিম কোর্টে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

রোববার (২৭ জুন) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন প্রমুখ অংশ নেন।

জানাজা শেষে এ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে তার মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। এখন শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর তাকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবর স্থানে দাফন করা হবে।

শনিবার (২৬ জুন) দিনগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জেয়াদ আল মালুম। মৃত্যুকালে তার হয়েছিল ৬৭ বছর।

গত ২৫ মে রাতে স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়লে জেয়াদ আল মালুমকে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে ওই হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার ফুসফুসে সংক্রমণ ও মারাত্মক জটিলতা ধরা পড়ে। এরপর তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ২৭ মে দুপুরে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। গত ২ জুন তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। মৃত্যুকালে এ আইনজীবী স্ত্রী অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগাহী রেখে গেছেন।

জেয়াদ আল মালুম ১৯৮৩ সালের ১৩ অক্টোবর আইন পেশার সনদপ্রাপ্ত হয়ে একই বছরের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। এরপর ১৯৮৯ সালের ৩০ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া গ্রামে। তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও ছাত্রজীবনে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ছিলেন।

২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান জেয়াদ আল মালুম। সেই থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

জেয়াদ আল মালুম মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আজম ও মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে করা মামলার বিচারে রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।