হত্যা মামলায় আসামির যাবজ্জীবন, দিতে হবে ক্ষতিপূরণও
এজলাস; অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা ১ম আদালত, কক্সবাজার

হত্যা মামলায় আসামির যাবজ্জীবন, দিতে হবে ক্ষতিপূরণও

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : হত্যার দায়ে কক্সবাজারে মো: খোকন নামক একজন আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। একইসাথে ১ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ১ বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ (ভারপ্রাপ্ত) নিশাত সুলতানা সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) এ রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো: খোকন চকরিয়ার খুটাখালী ইউনিয়নের নাইফের ঘোনার উত্তর ফুলছড়ির গ্রামের আইয়ুব আলীর পুত্র। রায় ঘোষণার সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী এবং আসামীর পক্ষে অ্যাডভোকেট হোসেন রাফাত ফিরোজ মামলাটি পরিচালনা করেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেলোয়ার হোসাইন ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ

কক্সবাজারের চকরিয়ার খুটাখালীর উত্তর ফুলছড়ির গরু লুটা পাড়ার মুদির দোকানদার হাজী ছিদ্দিক আহমদ এর পুত্র আবদুল মজিদ (২৮) ২০০৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী স্থানীয় ফুলছড়ি জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়তে যায়। আবদুল মজিদ নামাজরত অবস্থায় মো: খোকন পূর্বের লেনদেনের জের ধরে আবদুল মজিদকে পেটের বামপাশে চুরিকাঘাত করে খুন করে।

এ ঘটনায় নিহত আবদুল মজিদের পিতা হাজী ছিদ্দিক আহমদ বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় ৩০২/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার চকরিয়া থানা মামলা নম্বর ১০/২০০৮ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ৪০/২০০৮ (চকরিয়া) এবং এসটি মামলা নম্বর : ২২৩/২০০৮ ইংরেজি।

বিচার ও রায়

মামলাটি বিচারের জন্য ২০০৮ সালের ১৯ অক্টোবর চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে তাদের জেরা, সুরতহাল প্রতিবেদন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও আলামত পর্যালোচনা, আসামীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ সকল বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য সোমবার দিন ধার্য করা হয়।

রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ (ভারপ্রাপ্ত) নিশাত সুলতানা মামলার একমাত্র আসামী মোঃ খোকনকে ফৌজদারী দন্ড বিধির ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, একইসাথে ১ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ১ বছর বিনাশ্রম কারাদন্ডের রায় ঘোষণা করেন।

এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড দন্ডিত আসামীর কাছ থেকে আদায় সাপেক্ষে ৫০ হাজার টাকা মামলার খরচ বাবদ রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা করতে এবং অবশিষ্ট ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ নিহত আবদুল মজিদের পিতা হাজী ছিদ্দিক আহমদ প্রদানের জন্য বিচারক নিশাত সুলতানা তাঁর রায়ে উল্লেখ করেছেন।