সুনামগঞ্জে শিশুদের জন্য পৃথক বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
সুনামগঞ্জে শিশুদের জন্য পৃথক বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

সুনামগঞ্জে ‘শিশুদের জন্য পৃথক বিচার ব্যবস্থা’ নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

সুনামগঞ্জে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত, ইউনিসেফ বাংলাদেশের কারিগরি সহযোগিতায় “স্ট্রেংদেনিং ক্যাপাসিটি অব জুডিসিয়াল সিস্টেম ফর চাইল্ড প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ (এসসিজেএসসিপিবি)” প্রকল্পের আওতায় ২ দিন ব্যাপী ‘শিশু আইন-২০১৩’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে গত ১৬ ও ১৭ জুন অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হেমায়েত উদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের কো-অর্ডিনেটর নূরউদ্দিন মামুন।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের সিলেট ফিল্ড অফিসের চীফ কাজী দিল আফরোজা ইসলাম। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ফেসিলিটেটরের দায়িত্ব পালন করেন ইউনিসেফ বাংলাদেশের ন্যাশনাল এক্সপার্ট মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সুনামগঞ্জের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রোকন উদ্দিন কবির সহ জজশীপ ও ম্যাজিস্ট্রেসির বিচারকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন এবং এতে রিসোর্স পারসন হিসেবে শিশু আইন, ২০১৩ এর বিভিন্ন দিক নিয়ে সেশন পরিচালনা করেন সুনামগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হেমায়েত উদ্দিন এবং সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ জাকির হোসেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোঃ হেমায়েত উদ্দিন বলেন, শিশুরা Vulnerable গোষ্ঠী। তাই তাদের জন্য বিচার ব্যবস্থার পদ্ধতি, প্রচলিত বিচার ব্যবস্থা হতে আলাদা। মূল বিচার ব্যবস্থার লক্ষ্য থাকে শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে অপরাধ দমন। আর শিশুদের ক্ষেত্রে লক্ষ্য থাকে তাদেরকে স্নেহ-মমতা প্রদানের মাধ্যমে সংশোধন করে সমাজের মূল ধারার মাঝে ফিরিয়ে আনা।

বাংলাদেশ তার জন্ম লগ্ন থেকেই কল্যাণ রাষ্ট্র হওয়ার চেতনায়, মহান সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতেই শিশু, নারী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূল স্রোতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার ব্যবস্থা রেখেছে। সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য শিশু আইন, ২০১৩ এর বিষয়ে আয়োজিত এ কর্মশালার মাধ্যমে বিজ্ঞ বিচারকগণ আইনটি প্রয়োগের বিষয়ে নিজেদেরকে আরও সমৃদ্ধ করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি প্রত্যেক জেলায় ডেডিকেটেড শিশু আদালত প্রতিষ্ঠার বিষয়ে জোর দিয়ে বলেন, একই দিনে একজন বিচারক প্রাপ্ত বয়স্কদের বিচার করার ক্ষেত্রে যে ধরনের মনমানসিকতা থাকে, সেই একই বিচারক পরবর্তীতে শিশুর বিচার করার ক্ষেত্রে নিজেকে কোমল হৃদয় ধারণ করতে হয়। তাই একই আসনে বসে মাইন্ড সুইং করা একজন মানুষের পক্ষে সম্ভব না। পরিশেষে তিনি ইউনিসেফ বাংলাদেশকে শিশু আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।