বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কর্তাদের দুর্নীতি অনুসন্ধান স্থগিত চেয়ে আবেদনের শুনানিতে চেম্বার আদালত বলেছেন, রাষ্ট্রপতি ছাড়া কেউ আইনের আওতার বাইরে নয়। তাহলে বাফুফে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে বাধা কোথায়?
বাফুফের সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদীর আইনজীবীর উদ্দেশে আজ রোববার (২৫ জুন) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী এ মন্তব্য করেন।
আদালতে সালাম মুর্শেদীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মেহেদী হাছান চৌধুরী। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
শুনানি শেষে আদালত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ ফুটবল ফেডারেশনের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ বহাল রাখেন চেম্বার আদালত। তবে ফিফার টাকার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের আদেশে স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আদালত।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ ফুটবল ফেডারেশনের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এ আবেদন করেন। তবে আজ (রোববার) সকালে আবেদন প্রত্যাহার করেন কাজী সালাউদ্দিন।
গত ১৫ মে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ ফুটবল ফেডারেশনের সকল বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
চার মাসের মধ্যে দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের ফুটবল ফেডারেশনের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।
একইসঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ ফুটবল ফেডারেশনের সকল বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ শুনানি করেন।
পরে আইনজীবী ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ফিফা থেকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে যে অনুদান দেওয়া হয়েছিল সেই টাকাসহ সরকার থেকে ফুটবল ফেডারেশনের বরাদ্দ পাওয়া সব টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে, কোনো দুর্নীতি হয়েছে কিনা, সব বিষয়ে অনুসন্ধান করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
গত ১৪ মে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ ফুটবল ফেডারেশনের দুর্নীতি তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ রিট দায়ের করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, ক্রীড়া সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, ফুটবল ফেডারেশনসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
ব্যারিস্টার সুমন বলেছিলেন, ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়ন হচ্ছে না। ফুটবলকে বাঁচাতে হলে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এ কারণে রিট দায়ের করেছি।