এফআইআরে মানুষের বিকৃত নাম লেখাও মানবাধিকার লঙ্ঘন: প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান

প্রধান বিচারপতির জন্মদিন আজ

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ৬৪তম জন্মদিন আজ। ১৯৫৯ সালের আজকের দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি।

জন্ম, পরিচয় ও পড়াশোনা

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি তারিখে নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম ডা. আখলাকুল হোসাইন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি গণপরিষদ সদস্য হিসাবে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সংবিধান রচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং সংবিধান রচনার পর তাতে স্বাক্ষর প্রদান করেন।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতি বিষয়ে এম.এস.এস. ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি এলএল.বি. ডিগ্রী অর্জন করেন।

কর্মজীবন

তিনি ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ৫ (পাঁচ) বছর দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এবং আপিল বিভাগে অনেক সাংবিধানিক মোকদ্দমা পরিচালনা করেন।

বিচারপতি হিসেবে যোগদানের আগে তিনি দেওয়ানি, ফৌজদারি এবং সাংবিধানিক বিষয়াদি সম্পর্কিত মোকদ্দমার একজন দক্ষ আইনজীবী হিসেবে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধানমণ্ডি ল’ কলেজের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ২০০৯ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ৬ জুন একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।

তিনি ২০১২ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর একজন সদস্য হিসেবে যোগদান করেন এবং পরবর্তীতে ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

গ্রন্থ রচনা ও ভ্রমণ

তিনি ‘অবর্ণনীয় নির্মমতার চিত্র : একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ : একজন যুদ্ধশিশুর গল্প ও অন্যান্য’ নামক দুটি গ্রন্থ রচনা করেছেন।

বিচারপতি হাসান অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন। যার মধ্যে অন্যতম- পাকিস্তান, নেপাল, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, বেলিজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড সৌদি আরব।

১৯৯১ সালে বিচারপতি হাসান নিয়মিত আইনজীবী হিসেবে হংকং-এ অনুষ্ঠিত ‘ইন্টারন্যাশনাল ল’ইয়ারস কনফারেন্স’-এ অংশগ্রহণ করেন। গণচীনের প্রকিউরেটর জেনারেলের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেলের সফরসঙ্গী হিসেবে যান। ১৯৯৭ সালে চীনের বেইজিংসহ বেশ কিছু নগরী ভ্রমণ করেন।

পারিবারিক জীবন

তার একমাত্র ছেলে আহমেদ শাফকাত হাসান আইন বিষয়ক একজন গবেষক। তিনি যুক্তরাজ্যের ইনার টেম্পল থেকে বার-এট-ল করার পর ইউনির্ভার্সিটি অব ডারহাম থেকে আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে এলএল.এম.ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত। তার স্ত্রী নাফিসা বানু বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের নির্বাহী বোর্ডের সদস্য (অর্থ) হিসেবে কর্মরত আছেন।

এছাড়া বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের অনুজ সাজ্জাদুল হাসান বর্তমানে নেত্রকোণা-৪ আসনের সংসদ সদস্য। সাজ্জাদুল হাসান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ও বিমান পরিবহন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।