ফেসবুকে থাই রাজতন্ত্রের সমালোচনাকারীর ৫০ বছরের কারাদণ্ড
রেকর্ড-ভাঙা সাজা পাওয়া মংকোল থিরাকোট

ফেসবুকে থাই রাজতন্ত্রের সমালোচনাকারীর ৫০ বছরের কারাদণ্ড

থাই রাজতন্ত্রের সমালোচনা করায় গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দেশটির এক নাগরিককে ৫০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্রের মানহানিবিরোধী কঠোর আইনের (লিজ-ম্যাজিস্টি আইন) অধীনে কোনো ব্যক্তিকে দেওয়া সবচেয়ে দীর্ঘ কারাদণ্ড এটি। একটি আইনি অধিকারগোষ্ঠী এই তথ্য জানিয়েছে।

রেকর্ড-ভাঙা সাজা পাওয়া ব্যক্তির নাম মংকোল থিরাকোট। ৩০ বছর বয়সী গণতন্ত্রপন্থী সাবেক কর্মী মংকোলকে এই সাজা দেন দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর চিয়াং রাইয়ের একটি আপিল আদালত।

ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে থাই রাজতন্ত্রের সমালোচনা করে পোস্ট দেওয়ার দায়ে মংকোলকে দেশটির একটি বিচারিক আদালত ২৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। এই সাজার রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেন। আপিল আদালতে তিনি আরও ১১টি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন। এর ফলে তাঁর সাজা বেড়ে যায়।

থাই লইয়ার্স ফর হিউম্যান রাইটস (টিএলএইচআর) এক বিবৃতিতে বলেছে, বিচারিক আদালত আগেই মংকোলকে ২৮ বছরের কারাদণ্ড দেন। আর আপিল আদালত দিয়েছেন আরও ২২ বছরের কারাদণ্ড। ফলে এখন তাঁর কারাদণ্ডের মোট মেয়াদ দাঁড়াল ৫০ বছর।

টিএলএইচআর জানিয়েছে, মংকোল তাঁর ৫০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

লিজ-ম্যাজিস্টি আইনটি থাই রাজতন্ত্রকে যেকোনো ধরনের সমালোচনা থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকে। টিএলএইচআর জানিয়েছে, এই আইনে সবচেয়ে দীর্ঘ কারাদণ্ড পাওয়া ব্যক্তি মংকোল। এই আইনে দীর্ঘতম কারাদণ্ডের আগের রেকর্ডটি হয়েছিল ২০২১ সালে। তখন এক নারীকে ৪৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে এই আইনের ব্যবহার বাড়িয়েছে থাইল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ। সমালোচকেরা বলছেন, এটি ভিন্নমত দমনের একটি কৌশল।

লিজ-ম্যাজিস্টি আইনে দীর্ঘতম কারাদণ্ড পাওয়া মংকোল পেশায় একজন অনলাইন পোশাক বিক্রেতা। রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকালে ২০২১ সালে তিনি প্রথম গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।

থাইল্যান্ডে ২০২০ ও ২০২১ সালে যুবদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ হয়েছিল। এই বিক্ষোভে হাজারো মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। বিক্ষোভকারীদের অনেকে কঠোর লিজ-ম্যাজিস্টি আইন পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছিলেন।

টিএলএইচআরের তথ্যমতে, ২০২০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৫০ জনের বেশি ব্যক্তিকে লিজ-ম্যাজিস্টি আইনে অভিযুক্ত করা হয়েছে।