সাবেক বিচারক মোতাহার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করল দুদক
বিচারক (প্রতীকী ছবি)

নারী নির্যাতন মামলার আসামিকে সহকারী জজ নিয়োগ!

নারী নির্যাতন মামলার চার্জশিটভুক্ত এক আসামি সহকারী জজ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। নারীকে বাসে শ্লীলতাহানির ওই মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় শাহ পরান নামের ওই ব্যক্তি কীভাবে এ পদে নিয়োগ পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী বাসে পাশের নারীযাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও শারীরিকভাবে আঘাত করার অভিযোগে শাহ পরানের বিরুদ্ধে মামলা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় চট্টগ্রামের লোহাগড়া থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী।

পরবর্তীতে এই মামলায় পুলিশ শাহ পরানকে গ্রেফতার করে। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তদন্ত শেষে ১৬১ ধারায় সাক্ষীদের জবানবন্দি এবং প্রমাণের ভিত্তিতে শাহ পরানের বিরুদ্ধে ৮ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

পুলিশ ও আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, বাদীর অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় ১০ ধারায় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি এ মামলার চার্জ শুনানি হবে।

এ ঘটনার পর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহকারী পরিচালক পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় শাহ পরানকে। সম্প্রতি আইন মন্ত্রণালয় থেকে সহকারী জজ নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, শাহ পরানকে সহকারী জজ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। তাঁর কর্মস্থল নেত্রকোনা।

আইনজ্ঞরা বলছেন, নৈতিক স্খলনের অভিযোগ রয়েছে এমন ব্যক্তির কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করা যায় না। এ নিয়োগ নিয়ে জনগণের কাছে বিচার বিভাগ সম্পর্কে ভুল বার্তা পৌঁছাবে।

প্রশ্ন উঠেছে এতোকিছুর পর পুলিশ ভেরিফিকেশন পেরিয়ে তিনি কীভাবে নিয়োগ পেলেন, তা নিয়েও। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের এখনই ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলেও মনে করেন আইনজ্ঞরা।

ভুক্তভোগীর বক্তব্য

এ বিষয়ে মামলার বাদীর সাথে কথা হয় ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমের। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বাদী বলেন, তখন আমার একটু একটু ঘুম আসছিলো। এ সময় সে তার ডান হাত বের করে আমার উরুতে পাঞ্চ (মুষ্ট্যাঘাত) করে। পরপর দুইবার সে এই কাজ করে। এ সময় আমি তার দিকে তাকালে তিনি চাদর দিয়ে তার মুখটা ঢেকে ফেলে। তখন উনার চাদর সরিয়ে দেখি উনি ঘুমাননি। এরপর আমি তাকে তার কৃতকর্মের জন্য স্যরি বলতে বলি, কিন্তু তিনি তাতে অস্বীকৃতি জানান। বরং উল্টো সে আমার ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুলটা মুচড়ে দেয়।

বাদী জানান, মামলা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। পরে আমি এ বিষয়টি থানায় অবহিত করি এবং  জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করি।

বাদীর প্রত্যাশা ন্যায় বিচার ও আসামির যথোপযুক্ত সাজা। ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বাদী বলেন, বিচার প্রক্রিয়া যেন সুষ্ঠুভাবে হয় এবং অপরাধী যাতে প্রাপ্য শাস্তি পায়। তার মাধ্যমে যেন আর কেউ শ্লীলতাহানির শিকার না হয়।