ভিকটিম সেজে সাক্ষ্য দিতে এসে ধরা, বাদী-আসামী-ভুয়া সাক্ষীসহ কারাগারে ১১
কারাগার (প্রতীকী ছবি)

ভিকটিম সেজে সাক্ষ্য দিতে এসে ধরা, বাদী-আসামী-ভুয়া সাক্ষীসহ কারাগারে ১১

গোপালগঞ্জে একটি মামলায় ভিকটিম সেজে সাক্ষ্য দিতে এসে ধরা পড়ায় ভুয়া সাক্ষীসহ মামলার বাদী ও আসামী পক্ষের ১১ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে একটি পৃথক মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন।

আজ মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাহাদাত হোসেন ভুইয়া এ আদেশ দেন।

আদালতে ভিকটিম সেজে ভুয়া সাক্ষী দিতে আসা ব্যক্তির নাম শহীদুল শেখ। তিনি জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ডাঙ্গাদুর্গাপুর গ্রামের সাইফুল শেখের ছেলে। তবে এসময় ওই মামলার বাদী মোঃ তারা মিয়া এজলাস থেকে পালিয়ে যান।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে মুকসুদপুর উপজেলা ডাঙ্গাদুর্গাপুর গ্রামে জমিজায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সাইফুল শেখকে মারপিট ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় ভিকটিমের চাচা মোঃ তারা শেখ বাদী হয়ে মুকসুদপুর থানায় একটি মামলা (জি আর-১৮/২০২০) দায়ের করেন।

মঙ্গলবার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ওই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য ছিল। মামলার মূল সাক্ষী সাইফুল শেখ অনুপস্থিত থাকায় বাদী ও আসামী পক্ষের যোগসাজসে মামলাটি অর্থের বিনিময়ে মিমাংসার স্বার্থে তাঁর ছোট ভাই শহিদুল শেখ, সাইফুল শেখ সেজে সাক্ষ্য দিতে কাঠগড়ায় ওঠেন।

সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য জবানবন্দি গ্রহণকালে আদালতের বিচারক সাক্ষীর নাম জিজ্ঞাসা করলে সে প্রথমে তার নাম শহিদুল শেখ বলেন। তৎক্ষনাৎ আবার তার নাম সাইফুল শেখ বলেন। এতে আদালতের সন্দেহ হলে সাক্ষীর আইডি কার্ড দাখিলের নির্দেশ প্রদান করলে তৎক্ষনাৎ সাক্ষী জানায় তিনি সাইফুল শেখ নন। প্রকৃত পক্ষে তিনি হলেন শহীদুল শেখ।

মামলায় এজাহারকাকারী মোঃ তারা শেখ তার ভাইয়ের ছেলে শহীদুল শেখকে সাক্ষী সাইফুল শেখ উল্লেখ করে আদালতে উপস্থাপন করেছেন বলে অতিরিক্ত পিপি এম এ হাই আদালতকে জানান।

পরস্পরের যোগসাজসে আদালতে ভুয়া নাম ব্যবহার করে শহীদুল শেখ আদালতে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করে ডকে উঠে মিথ্যা পরিচয়ে শপথ বাক্য পাঠ করে দণ্ডবিধির ১৯৩/১৯৬/২০৫/৪১৯/১০৯ ধারায় অপরাধ করেছেন।

এপ্রেক্ষিতে আদালত ভুয়া সাক্ষী, বাদী ও আসামীসহ ১১ জনকে জেল হাজতে পাঠাতে এবং তাদের বিরুদ্ধে একটি পৃথক মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন।

আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এ ঘটনায় সিজেএম আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ জামিল আহমেদ বাদী হয়ে ভুয়া ভিকটিমসহ বাদী ও আসামী পক্ষের ১২ জনকে আসামী করে গোপালগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।