ঠাকুরগাঁওয়ে ১৪ হিন্দু মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের নিন্দা ও প্রতিবাদ

ঠাকুরগাঁওয়ে ১৪ হিন্দু মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের নিন্দা ও প্রতিবাদ

ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ১৪টি হিন্দু মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ এবং নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

একইসাথে, উক্ত ঘটনায় বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠনের মাধ্যমে দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক দায়ীদের চিহ্নিত করে ফৌজদারী আইনে স্বচ্ছ বিচারে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ।

আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ -এর প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম সই করা গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্ত কর্তৃক ঠাকুরগাঁও এ চৌদ্দটি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা বাংলাদেশের সকল ধর্মের নাগরিকের স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের অধিকারের মত মৌলিক মানবাধিকারের ওপর সরাসরি হুমকি বলে মনে করে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ।

বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় যে, গত ইংরেজী ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ তারিখ দিবাগত রাতে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ১৪টি মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার ভোর রাতের কোনো এক সময় উপজেলার ধনতলাইউনিয়নে ৯টি, চাড়োল ইউনিয়নে ১টি ও পাড়িয়া ইউনিয়নে ৪টি মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।

সেগুলোর মধ্যে ধনতলা ইউনিয়নের সিন্দুরপিন্ডি থেকে টাকাহারা একটি হরিবাসর মন্দির, একটি কৃষ্ণঠাকুর মন্দির, পাঁচটি মনসা মন্দির, একটি লক্ষ্মীমন্দির ও একটি কালি মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করেছে।

এছাড়াও চাড়োল ইউনিয়নে একটি কালী মন্দির ও পাড়িয়া ইউনিয়নে একটি বুড়া-বুড়ি মন্দির, একটি লক্ষ্মী মন্দির, একটি আমাতি মন্দির ও একটি মাসানমাঠ মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভাংচুর করা হয়েছে।

সেসময় দুর্বৃত্তরা প্রতিমাগুলোর হাত-পা, মাথা ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলেছে। আবার কিছু প্রতিমা ভেঙে পুকুরের পানিতে ফেলে রেখেছে। হঠাৎ করে কে বা কারা রাতের আঁধারে প্রতিমাগুলো ভাংচুর করায় এল্কার ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিরা আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে।

পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ মন্দির ও প্রতিমা পুনঃনির্মাণ ও পুনঃস্থাপনসহ ভবিষ্যতে যেন এলাকার সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় কোন প্রকার ভয় ভীতি ছাড়া নির্বিঘ্নে তাদের ধর্ম পালন করতে পারে সেই পরিবেশের নিশ্চয়তার প্রদানের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহনের আহবান জানিয়েছে অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম।

জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ -এর প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে উল্লেখ করেন যে, অতীতে বিভিন্ন সময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর সংঘঠিত সহিংসতায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকার ও বিরোধী মতাদর্শের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

তাছাড়া, সেইসব ঘটনায় প্রকৃত দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিতপূর্বক বিচারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান না করায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর সহিংসতার ঘটনা কমছে না। তাই, উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত অভিযুক্তদের দ্রুত চিহ্নিত পূর্বক গ্রেফতার করে বিচারে সোপর্দ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোর দাবী জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম।

সর্বোপরি, অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম উক্ত ন্যক্কারজনক ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত নিরীহ মানুষকে যেন হয়রানি না করা হয়, সে বিষয়েও প্রশাসনকে সতর্ক থাকার এবং সংখ্যালঘুদের স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের নিশ্চয়তা সহ জান-মালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য দ্রুত সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জোড় দাবী জানিয়েছেন।